পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় কৃষক লীগ নেতার দখল থেকে সুগার মিলের এক একর জমি উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলার তিরনইহাট বাজারস্থ এলাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বিজিবির এক যৌথ অভিযানে তিরনইহাট ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কামাল হোসেনের দখলে থাকা এক একর জমি উদ্ধার করা হয়।
এ সময় জমিতে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা উপড়ে ফেলে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করা হয়। পরে সেখানে চিনিকলের একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
পঞ্চগড় সুগার মিল সূত্র জানায়, বর্তমানে সুগার মিলে আখ মাড়াই কাজ বন্ধ থাকায় তিরনইহাট ইক্ষু ক্রয় কেন্দ্রটির কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। এই সুযোগে স্থানীয় কৃষক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন ২০২০ সালে ইক্ষুক্রয় কেন্দ্রের এক একর জমি দলীয় ক্ষমতা বলে দখল করেন। এ নিয়ে একাধিকবার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে আদালত সুগার মিলের পক্ষে রায় দেন। শেষ পর্যন্ত মামলাটি হাইকোর্টে গেলে সেখানেও সুগার মিল রায় পায়। অবশেষে উপজেলা প্রশাসন ও বিজিবির যৌথ সহায়তায় জমিটি অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় মিলের জমির চৌহদ্দি নির্ধারণ করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসান, পঞ্চগড় সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম, জেনারেল ম্যানেজার (অর্থ) ফজলে এলাহি, জেনারেল ম্যানেজার (কৃষি) ফরিদুল আলম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার শিল্পী খাতুন, নায়েক সুবেদার মোজাম্মেল হক, বিজিবি গোয়ালগছ ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মোজাম্মেল হক ও চিনিকলের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তবে তিরনইহাট ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, জমিটি আমার দাদার ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত। যার কাগজপত্র আমার কাছে রয়েছে। মহামান্য হাইকোর্টে মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও সুগার মিল কর্তৃপক্ষ আইনকে তোয়াক্কা না করে বিনা নোটিশে আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছে। এর আগে আমি একাধিকবার জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুষ্ঠু তদন্ত করে কাগজপত্র দেখুক যাতে আমি এর প্রতিকার পাই।
পঞ্চগড় চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ওই জমিটি সরকারি সম্পত্তি। তিরনইহাট ইউনিয়নের চিনিকলের সাবজোনের ইক্ষুক্রয় কেন্দ্র ছিল। ১৯৮০ সালে কেনা ওই জমিতে চিনিকলের স্থাপনা আছে, দখলেও ছিল। কিন্তু ২০২০ সালে এখানকার স্থানীয় কামাল হোসেন ক্ষমতার জোরে জমিটি দখল নিয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন। এ নিয়ে দীর্ঘদিন আইনি লড়াই শেষে আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিলে আমরা উপজেলা প্রশাসন ও বিজিবির সহায়তায় পুনরুদ্ধার করে আমাদের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়।
তেঁতুলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। যদি বক্তব্য প্রয়োজন হয় তাহলে ইউএনও বা ডিসি স্যারের বক্তব্য নেন।