অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রীকে হত্যা মামলায় ওই দম্পতির সন্তান ঐশী রহমানের সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (১৫ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে হাইকোর্টের দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করতে ঐশীকে অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। ঐশীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ফয়সল এইচ খান।
হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ৫ জুন পাঁচটি যুক্তি দেখিয়ে ঐশীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। এর সাড়ে চারমাস পর একই বছরের ২২ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। এ রায়ের কপি পাওয়ার পর সাজা বাড়াতে আপিল করার অনুমতি চেয়ে লিভ টু আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
পাশাপাশি ঐশীও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে (লিভ টু আপিল) আবেদন করে। উভয় আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে ঐশীর আবেদন মঞ্জুর করা হয় এবং রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করা হয়।
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ভাই মশিউর রহমান বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই নিহত দম্পতির মেয়ে ঐশী রহমান পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করে তার বাবা-মাকে নিজেই খুন করার কথা স্বীকার করে।
এ মামলায় তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৪ সালের ৯ মার্চ পৃথক দুটি অভিযোগপত্র দাখিল করে। একটি অভিযোগপত্রে ঐশী রহমান এবং তার দুই বন্ধু মিজানুর রহমান রনি ও আসাদুজ্জামান জনিসহ চারজনকে আসামি করা হয়। আরেকটি অভিযোগপত্রে গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমিকে আসামি করা হয়। সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার মামলাটির বিচার সম্পন্ন হয় শিশু আদালতে।
সেখানে সুমি খালাস পায়। আর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর এক রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো একবছরের কারাদণ্ড দেয়। ঐশীকে দুইবার মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া মিজানুর রহমান রনিকে দু’বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দেয়া হয়। এরপর ঐশীর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়।