মিথ্যা বলা হারাম, পরকালে মিথ্যা বলার শাস্তি হবে খুবই কঠোর। এমনকি ইসলামি শরীয়তের একটি মূলনীতি রয়েছে, ‘সত্য মুক্তি দেয় আর মিথ্যা ধ্বংস ডেকে আনে।
এ প্রসঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস। যেখানে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সত্যবাদিতা হচ্ছে শুভ কাজ। আর শুভ কাজ জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। আর বান্দা যখন সত্য বলতে থাকে, একসময় আল্লাহর নিকট সে সত্যবাদী হিসেবে পরিগণিত হয়। আর মিথ্যা হচ্ছে পাপাচার, পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়, বান্দা যখন মিথ্যা বলতে থাকে, আল্লাহর নিকট একসময় সে মিথ্যুক হিসেবে গণ্য হয়। বুখারি, হাদিস নং: ৫৭৪৩; মুসলিম, হাদিস নং: ২৬০৭।
মিথ্যা বলা সম্পর্কে এত কঠিন বিধান থাকার পরও স্ত্রীর সাথে মিথ্যা বলা যাবে। তবে সেটা সব ক্ষেত্রে না। শুধুমাত্র মোহাব্বত এবং ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে।
অন্তরে যে মহব্বত আছে তার চেয়ে বেশি প্রকাশ করা যাবে এবং এমন কথা বলা যাবে যার দ্বারা উভয়ের মাঝে হৃদ্যতা, অন্তরঙ্গতা ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায় এবং পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক স্থায়ী থাকে। এটা থেকে অকল্যাণ নয় বরং কল্যাণের সূচনা হয়।
হাদিসে এসেছে, উম্মে কুলসুম বিনতে উকবাহ রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধুমাত্র তিনটি ব্যাপারেই মিথ্যা বলার সুযোগ দিয়েছেন। তা হচ্ছে –
لَا أَعُدُّهُ كَاذِبًا : الرَّجُلُ يُصْلِحُ بَيْنَ النَّاسِ، يَقُوْلُ الْقَوْلَ وَلَا يُرِيْدُ بِهِ إِلاَّ الْإِصْلَاحَ، وَالرَّجُلُ يَقُوْلُ فِيْ الْـحَرْبِ، وَالرَّجُلُ يُحَدِّثُ اِمْرَأَتَهُ، وَالْـمَرْأَةُ تُحَدِّثُ زَوْجَهَا.
‘‘আমি মিথ্যা মনে করি না যে, কোন ব্যক্তি মানুষের পরস্পর বিরোধ মীমাংসার জন্য কোন কথা বানিয়ে বললে। যদি তার উদ্দেশ্য কেবল বিরোধ মীমাংসা করা হয়। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি শত্রু পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধে জেতার জন্য কোন কথা বানিয়ে বললে, সেটাও আমি মিথ্যা মনে করি না। তেমনিভাবে কোন পুরুষ নিজ স্ত্রীর সঙ্গে এবং কোন মহিলা নিজ স্বামীর সঙ্গে কোন কথা বানিয়ে বললে, সেটাও মিথ্যা মনে করি না।
সুনানে আবু দাউদ,হাদিস নং ৪৯২১।
সুনানে বায়হাকি হাদিস নং ২০৬২১।
সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ২০১১।
এ কথার উপরে অধিকাংশ ফকিহ এবং মুহাককিকগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন।
লেখক: মুফতি মাহমুদুল হক জালীস, মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।
#বার্তাবাজার