রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় দায়েরকৃত মামলায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক মুফতি শরিফউল্লাহর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল একদিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। অপরদিকে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ১৪ই এপ্রিল তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন যাত্রাবাড়ী থানার পরিদর্শক আয়ান মাহমুদ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সাঈদ তার একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ১৩ই এপ্রিল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ীর মীর হাজিরবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপি’র গোয়েন্দা (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ই মে ঢাকা অবরোধ করে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।
পরের দিন ৬ই মে ভোর ৫টা ৫ মিনিটের দিকে হেফাজত নেতাকর্মীরা যাত্রাবাড়ী থানার ডব্লিউ জেট ফিলিং স্টেশনের বিপরীত দিকে রাস্তার ওপর কদমতলী থানার কাজে ব্যবহৃত ঢাকা মেট্রো-ঠ- ১৪-১৭০৫ পুলিশ পিকআপে অগ্নিসংযোগ করে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। পরে ওই দিন সকাল ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার রায়েরবাগস্থ ইউনাইটেড পেট্রোল পাম্পের সামনে পৌঁছা মাত্রই আসামি শরীফউল্লাহসহ অন্য আরো ৪০০-৫০০ জন দুষ্কৃতকারী হঠাৎ করে ট্রাকটির ওপর বেআইনিভাবে মারমুখী হয়ে গাড়ির ওপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে এবং গাড়িতে অবস্থানকারী ফোর্সদের হত্যার উদ্দেশ্যে ইট-পাথর, লোহার রড, পাইপ ইত্যাদি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা পালিয়ে প্রাণরক্ষা করেন। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি মুফতি শরিফউল্লাহ।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, মুফতি শরীফউল্লাহ হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেশে আসা নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক তা-ব চালায় হেফাজতে ইসলাম। সম্প্রতি হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের রিসোর্ট কান্ডের পর একে একে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।