সূরা আল ফাতেহা পবিত্র আল কোরআনের প্রথম সূরা। আয়াত সাতটি। মক্কায় অবতীর্ণ। প্রথম তিনটি আয়াত মহান আল্লাহতায়ালার প্রশংসা এবং শেষ তিন আয়াত মানুষের পক্ষ হতে আল্লাহপাকের কাছে প্রার্থনা ও দরখাস্তের বিষয়বস্তুর সংমিশ্রণ। মধ্যের একটি আয়াত প্রশংসা ও দোয়া মিশ্রিত। এ সূরা দ্বারা চিরতরে আল্লাহপাক ছাড়া অন্য কারও ইবাদত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘ফাতিহা’ শব্দের অর্থ শুরু, আরম্ভ, উদ্বোধন, উদঘাটন প্রভৃতি। কুরআনুল কারিমের ১১৪টি সূরার মধ্যে প্রথম সূরাটি হলো সূরাতুল ফাতিহা। আর এ জন্য সূরা ফাতিহাকে ‘ফাতিহাতুল কুরআন’ বা কুরআনের শুরু বলে অভিহিত করা হয়। সূরা ফাতিহাকে সূরাতুল হামদ, উম্মুল কুরআন, আসসাবউল মাছানি, ওয়াকিয়াহ, সূরাতুল কাফিয়্যাহ, সূরাতুল কানয, সূরাতুশ শিফা ও সূরাতুল আসাস নামেও অভিহিত করা হয়।
সূরা ফাতিহার ফজিলতের কথা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। ‘খাজিনাতুল আসরার’ কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ফজরের সুন্নত নামাজ আদায় করে ফরজ নামাজ আদায়ের আগে কেউ যদি বিসমিল্লাহসহ সূরা ফাতিহা ৪০ বার পাঠ করে তাহলে ওই ব্যক্তি নিঃসন্তান থাকলে সন্তান হবে, বেকার থাকলে চাকরি হবে, ঋণ থাকলে ঋণ পরিশোধের উপায় হয়ে যাবে, সম্পদহীন থাকলে সম্পদ লাভ হবে, অসুস্থ থাকলে সুস্থ হয়ে যাবে ও বিপদাপন্ন হলে উদ্ধার পেয়ে যাবে’।
হজরত আলী রা: বলেছেন, কোনো বিপদে পতিত ব্যক্তি এক হাজার বার সূরা ফাতিহা পাঠ করলে ওই ব্যক্তির আর বিপদ থাকতে পারে না। হজরত ইমাম জাফর সাদেক রা: বলেছেন, ‘৪১ বার সূরা ফাতিহা পাঠ করে পানিতে ফুঁক দিয়ে কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে খাওয়ালে অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যাবে’। (তাওয়ারিখে মদিনা)।
হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, একবার এক সফরে আমাদের এক সাথি জনৈক গোত্রপতিকে শুধু সূরা আল ফাতেহা পড়ে ফুঁ দিয়ে সাপের বিষ ঝাড়েন এবং তিনি সুস্থ হয়ে যান (বুখারী শরীফ :৫৪০৫)। এ দেখে রাসূল (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, এটা যে রকিয়্যাহ (অর্থাৎ পড়ে ফুঁ দেয়ার সূরা) তা তুমি কেমন করে জানলে? (তাফসীরে ইবনে কাসীর)।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) ফরমিয়েছেন, তোমরা সূরা ফাতেহা পড়। কোনো বান্দা যখন বলে আলহামদুলিল্লাহি রাবি্বল আলামিন, তখন আল্লাহপাক বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছেন। যখন আমার বান্দা বলে, আররাহমানির রাহিম, তখন আল্লাহপাক বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে।