মাদারীপুরে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি সমন্বিত অফিসগুলোর ১০ তলা ভবনের জানালার ২৪টি গ্লাস বাতাসে খুলে পড়ে ভেঙে গেছে। এ ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করছে ঠিকাদার ও গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ।
গণপূর্ত অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, ঠিকাদার গ্লাসগুলো সঠিকভাবে স্থাপন না করায় হালকা বাতাসে খুলে পড়ে ভেঙে গেছে। তবে ঠিকাদারের দাবি, গ্লাসগুলো সঠিকভাবে লাগানো হয়েছে। ঝোড়ো বাসাতে এগুলো খুলে পড়ে ভেঙে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর লেকেরপাড়ে গত ১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি সমন্বিত অফিসসমূহের জন্য নির্মিত ১০ তলা ভবনে ২৫টি অফিসের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরই মধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি বৃষ্টি ও হালকা বাতাস প্রবাহিত হলে ভবনটির ছয় তলার ৪২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট উচ্চতার জানালার ২৪টি গ্লাস খুলে পড়ে ভেঙে যায়। এই ঘটনায় ত্রুটিপূর্ণভাবে জানালার গ্লাসগুলো স্থাপন করার অভিযোগ উঠলে ঠিকাদার ও গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে।
এ বিষয়ে মাদারীপুরের গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খান বলেন, ‘নতুন ১০ তলা ভবনের ছয় তলায় গ্লাসগুলো যখন জানালায় স্থাপন করা হয়, সঠিকভাবে স্থাপন না করায় হালকা বাতাসে পড়ে ভেঙে গেছে। এখন আমরা বিষয়টি ঢাকায় জানিয়েছি। খুব দ্রুত ভবনের আর কি কি ধরনের সমস্যা আছে, সেসব বিষয় একটি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।’
ভবনের স্থানীয় ঠিকাদার সৈয়দ আবুল বাশার বলেন, ‘ছয় তলার জানালার গ্লাসগুলো বাতাসে ভেঙে পড়ার পেছনে আমাদের কোনও ভুল ছিল না। যদি ভুল থেকে থাকে, সেটা গণপূর্ত কর্মকর্তাদের। আমাদের কর্মীরা তো ঠিকমতো গ্লাসগুলো বসিয়েছে। এটা দেখা ও মনিটর করার কথা ইঞ্জিনিয়ারদের। এখন তারাই ভালো বলতে পারবে, কি কারণে গ্লাসগুলো পড়ে ভেঙে গেছে। আমরা বলতে পারবো না। আমরা ঠিকভাবেই বসিয়েছিলাম গ্লাসগুলো।’
মাদারীপুর গণপূর্ত প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, শহরের শকুনি লেকের উত্তর পাড়ের পুরনো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জমিতে ৬৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচে ২০১৬ সালে ১০ তলা সরকারি সমন্বিত অফিস ভবনটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। যা শেষ হয় চলতি বছরের আগস্ট মাসে।
এখানে ব্যাংক ও গণপূর্ত কন্ট্রোল রুম, ক্যাফেটেরিয়া ও পোস্ট অফিস, জেলা নির্বাচন অফিস, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র অফিস, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, জেলা সমবায় কার্যালয়, জেলা মার্কেটিং অফিস, জেলা তথ্য অফিস, একটি বাড়ি একটি খামার, ঔষধ তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়, জেলা পাট অধিদফতরের কার্যালয়, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট অফিস, জেলা সঞ্চয় অফিস, জেলা ক্রীড়া অফিস, জেলা সমাজসেবা অফিস, জেলা শিশু একাডেমি, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগ, হিসাব তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়, জেলা উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুারো, জেলা প্রশাসকের বিশেষ কার্যালয়, গণপূর্ত উপ-বিভাগীয় কার্যালয়সহ ২৫টি সরকারি অফিসকে ভবন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে সবগুলো অফিস এখনও নতুন ভবনে এসে কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।