মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার চর বাউশিয়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন নাবিস্কো কোম্পানির একটি বাগান থেকে গত দুইদিন থেকে দুর্গন্ধ পাচ্ছিল এলাকাবাসী। দুর্গন্ধের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকলে বুধবার সকালে তার উৎস খুঁজতে গিয়ে বাগানের ভেতর অজ্ঞাত এক যুবকের মৃতদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। পরে পুলিশে খবর দিলে লাশটি উদ্ধার করে তারা নিয়ে যায়। শারীরিক গড়নের মিল থাকায় দশদিন ধরে নিখোঁজ সেনা জাহিদ হোসেনের (২১) পরিবারকে খবর দেওয়া হলে তারা নিশ্চিত করে লাশটি জাহিদের।
নিহত জাহিদ হোসেন (২১) সদ্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি পেয়েছিলেন। তিনি উপজেলার টেংগারচর গ্রামের দরিদ্র কৃষক আবুল কালামের ছেলে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি তার চাকরিতে যোগদানের কথা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত দুই দিন ধরে নাবিস্কো কোম্পানির বাগান থেকে দুর্গন্ধ আসছিল। দুর্গন্ধের তীব্রতা আরও বাড়তে থাকলে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকজন বাগানের ভেতরে দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবকের অর্ধ গলিত লাশ দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় তারা।
নিহত জাহিদের বাবা দরিদ্র কৃষক আবুল কালাম বলেন, দুপুর ১টার দিকে পুলিশের ফোন পেয়ে তারা থানায় আসেন।
লাশটি অর্ধগলিত হওয়ায় প্রথমে লাশের ছবি দেখে তারা শনাক্ত করতে পারেননি। কিন্তু পরবর্তীতে লাশ দেখে এবং তার ছেলের গায়ে থাকা চাদর ও পায়ের জুতা দেখে তারা নিশ্চিত হয়েছেন লাশটি জাহিদের। তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মা মনোয়ারা বেগম বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সেনা সদস্য হিসেবে চাকরিতে যোগদানের কথা ছিল জাহিদের। ছেলেকে ঘিরে থাকা তাদের এক বুক স্বপ্ন সব শেষ হয়ে গেল। জাহিদকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে হত্যাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি।
গজারিয়া থানার ওসি মো. রইছ উদ্দিন বলেন, পুলিশ একটি লাশ উদ্ধার করেছে, স্বজনরা শনাক্ত করেছে লাশটি টেংগারচর গ্রাম থেকে নিখোঁজ হওয়া যুবক জাহিদের। লাশটির গায়ে আঘাতের চিহ্ন এবং লাশটি যেভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে তা দেখে প্রাথমিকভাবে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করছেন তারা। পুলিশের তদন্ত চলছে।