সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের (বিলিয়া) এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সাল, সময়কাল, শহীদের সংখ্যা, জাতীয় চার নেতা কারা ছিলেন জানে না শিক্ষার্থীরা। তারা জানে না দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নামও।
গাজীপুরের টঙ্গি এলাকার সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০৫ জন শিক্ষার্থীর ওপর চালানো এক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে।
গবেষণায় মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে প্রায়োগিক বাস্তবতা জানতে টঙ্গি এলাকার সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১০৫ জন শিক্ষার্থীর ওপর একটি জরিপ চালানো হয়। এতে মুক্তিযুদ্ধ কতসালে সংঘঠিত হয়, সেই প্রশ্নের উত্তর ১২% ছাত্রছাত্রী দিতে পারেনি। কেউ বলেছে ১৯৫২ সালে, কেউ বলেছে ১৯৪৭ সালে। মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল জানা নেই ৬% শিক্ষার্থীর, ভুল উত্তরে তারা কেউ বলেছে ১ বছর, কেউ বলেছে ২৩ বছর। এই যুদ্ধে কতজন শহীদ হন প্রশ্নের জবাবে ৭৬% ভুল উত্তর দিয়েছে। কেউ বলেছে ৫ জন, কেউ ১ লাখ, কেউ ৩ লাখ।
জাতীয় চার নেতা কারা জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের নাম উল্লেখ করে।
এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার টানা ১৩ বছর ক্ষমতায় রয়েছে। তারপরও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে নানা তথ্য বিভ্রান্তি, বিভ্রাট ও অসঙ্গতি রয়েছে। এগুলো আর কবে দূর হবে?
তারা সব শ্রেণিতে ‘‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’’ নামে পৃথক একটি বই রাখার দাবি জানান।
সম্প্রতি রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় জরিপের ফল প্রকাশিত হয়। সেখানে এ উদ্বেগের কথা জানান দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও নাগরিকরা।
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষানীতিতে আমরা দুটি পরীক্ষা রেখে চূড়ান্ত করে এসেছিলাম। কয়েকদিন পরে দেখি চারটি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। নীতি খুলে দেখি, সেখানে তিনটি পরীক্ষার কথা বলা আছে। বাস্তবে প্রয়োগ হচ্ছিল চারটি। আমাদের আমলাদের একটি অংশ মনে করেন, তারা সব বিষয়েই ভালো জানেন। সমস্যা অনেক আছে। এগুলো মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে সামনে। আমি আশাবাদী মানুষ।
মফিদুল হক বলেন, পাঠ্যপুস্তক জাতির জ্ঞান সৃষ্টিতে ও মানসগঠনে কাজে আসে। প্রাথমিকের পাঁচটি শ্রেণি একটি মালার মত করে গেঁথে ধারাবাহিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শিশুদের শেখাতে হবে। অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, পাঠ্যপুস্তক লেখার বিশেষ কৌশল রয়েছেছ এ বিষয়ে দক্ষ লোকের অভাব আমাদের দেশে। বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আশা লোকও কম।
