এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পর এবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ১৯তম স্থান অর্জন করেন ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিষয়ে চান্স পাওয়া বিদ্যুৎ কুমার দাস।
কিন্তু অর্থাভাবে সেই আনন্দ এখন বিষাদে পরিণত হতে যাচ্ছে। সামনের পুরোটা পথ তার অনিশ্চিত। দারিদ্র্যতার কারণে চান্স পেয়ে ভর্তির পরও পড়ালেখা চালানো নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন বাবা-মা। তার চোখমুখে এখন হতাশার ছাপ।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার আড়ানী পূর্বপাড়া মহল্লার চার্মকারের (মুচি) কাজ করা আনন্দ কুমার দাসের ছেলে বিদ্যুৎ কুমার দাস। বিদ্যুতের বাবা চার্মকার ও বড় ভাই পরিমল কুমার দাস নাপিতের কাজ করে যে আয় হয়, সেই আয় দিয়ে চলে ছয় সদস্যের সংসার।
মা ভাদুরী কুমারী দাস গৃহিণী। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে বিদ্যুৎ ছোট। অভাবের কারণে বড় ভাই পরিমল কুমার দাস ও বোন সিতাকে পড়ালেখা করাতে পারেননি। তবে জমি বলতে বাড়ির ভিটাটুকু।
বিদ্যুতের বাবা আনন্দ কুমার দাস বলেন, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হওয়ার স্বপ্ন আগেই ছিল। আমি আড়ানী বাজারে মিতা টেলিকম দোকানের সামনে ফুটপাতে জুতা-স্যান্ডেলের শেলাইয়ের কাজ করি। প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়। বড় ছেলে সেলুনে কাজ করে আমার মতোই আয় করে। এই আয় দিকে কষ্ট করে সংসার চালায়। কিন্তু ছোট ছেলে বিদ্যুতের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ি। ভর্তির দিনও শেষ হয়ে যাচ্ছিল, কোনো উপায় না পেয়ে অন্য একজনের কাছে থেকে ৭ হাজার টাকা ধার নিয়ে ভর্তি করে দিয়েছি। কিন্তু ছেলেকে শহরে রেখে কি করে লেখাপাড়া করাব এ নিয়ে চিন্তায় আছি। স্বল্প আয়ে চলে ৬ সদস্যের পরিবার।
বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি। আবার কখনো কখনো বাবাকে সহযোগিতা করেছি। স্কুলজীবন থেকে শুরু করে সব পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো ফল করতে চাই।
আড়ানী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান রানা বলেন, পরিবার থেকে অর্থের জোগান দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো এই পরিবারের পক্ষে খুব কঠিন। তার জন্য সমাজের শিক্ষানুরাগী কোনো সুহৃদ ব্যক্তির একটু সহযোগিতা পেলে লেখাপড়া শেষ করে একটি ভালো চাকরি পেলে তার পথ নিশ্চিত হতে পারে।
সাহায্য পাঠানোর জন্য: পরিমল কুমার দাস, হিসাব নং ১০১৬৮১, গ্রামীণ ব্যাংক, আড়ানী শাখা।