প্রতিদিন শত শত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। ঘরে-বাইরে যখন সবখানে মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ, এমন সময় ড্রোন দিয়ে মশা খুঁজছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। গত বছরও একই পদ্ধতিতে মশার উৎস খোঁজ করেছিল সংস্থাটি।
Google News গুগল নিউজে প্রতিদিনের বাংলাদেশ’র খবর পড়তে ফলো করুন
বুধবার (৫ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ড্রোনের মাধ্যমে ভবনের ছাদবাগানে মশার উৎস চিহ্নিতকরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা। এ সময় তিনি বলেন, ‘ড্রোনের মাধ্যমে ডিএনসিসি এলাকার সব ভবনের ছাদ পরীক্ষা করে দেখা হবে। ছাদে ও ছাদবাগানে পানি জমা থাকলে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা গিয়ে পরিদর্শন করে দেখবেন লার্ভা আছে কি না। কারও অবহেলায় লার্ভা পাওয়ার প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাঁচটি ড্রোনের মাধ্যমে ডিএনসিসি এলাকার সব ভবন সার্ভে করা হবে।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন থেকে নিয়মিত লার্ভিসাইডিং করার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিএনসিসি ও বাংলাদেশ স্কাউটের সদস্যদের যুক্ত করে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। মসজিদ-মাদ্রাসার ইমাম ও খতিব এবং স্কুল-কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছি। ইতোমধ্যে ডিএনসিসির সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে চেষ্টা করছি। তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। ছাদে ও বারান্দায় কোথাও পানি জমতে দেওয়া যাবে না।’
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। সচেতনতা বাড়াতে আমরা ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিএনসিসির মেয়রের নির্দেশে ৮ জুলাই শনিবার থেকে মাসব্যাপী বিশেষ মশক নিধন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে মশার উৎসস্থল ধ্বংস করা হবে। এডিসের লার্ভা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।’
অভিযানে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম শফিকুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ, ২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সলিমউল্লাহ (সলু), ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাসেম, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শাহিন আক্তার সাথী, রোকসানা আলম প্রমুখ।
গতকাল মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজন মারা যান। যা এই মৌসুমের এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৭৮ জন। এ সময় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ৪২৯ জনকে। আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ২৪৯ জনকে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১ হাজার ৬৬৯ জন।
চলতি বছরের সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে গত জুন মাসে। জুনে দেশে ৩৪ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৯৫৬ জন। দেশে ডেঙ্গুতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৮৭১ জন। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো ৬১ জনের।