রাজধানীর পল্লবী স্বপ্ন নগর আবাসিক এলাকায় রিহান ইসলাম পাভেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- রায়হান বাবু (২৪), সোহেল তোতা মামা (২৪) ও বাচ্চু ওরফে কাজল বাচ্চু (২৩)।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) টাঙ্গাইল, বরগুনা ও বরিশাল মহানগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
এর আগে এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, পূর্ব শত্রুতা, চাঁদাবাজি ও মাদকের জের ধরে পাভেলকে হত্যা করা হয়। ভুক্তভোগী ও মূল অভিযুক্ত বন্ধু হলেও তাদের মধ্যে শত্রুতা ছিল।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় গ্রুপিং নিয়ে পাভেল ও হাবিবের মধ্যে মারামারি হয়েছিল। সেসময় পাভেল হাবিবের হাতে কোপ দিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় ২০২৩ সালে ২৮ ডিসেম্বর বাড্ডা থানায় মামলাও হয়। পাভেল জেল খাটলেও হাবিব শত্রুতা ভুলে যায়নি।
জেল থেকে বের হলেও হাবিব পাভেলকে উচিত শিক্ষা দেবার পরিকল্পনা করতে থাকের। সে অনুযায়ী তাজমুল মোটরসাইকেলে পাভেলকে পল্লবীতে নিয়ে যান। পরে হাবিবের নিজের দুই ভাই হানিফ ও আনিছসহ কয়েকজন মিলে পাভেলকে কুপিয়ে হত্যা করেন।
ওই ঘটনায় সরাসরি ছুরিকাঘাতে জড়িত তিনজনকে ডিবি মিরপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি থানা পুলিশও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডিবি মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদ হাসান জানান, পাভেল হত্যায় এখনো দুইজন পলাতক রয়েছে। পাভেল হত্যায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব হলেও পাভেলকে তুলে নিয়ে আসা তাজমুল ও হাবিবের আরেক ভাই হানিফ এখনো পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ডিবি জানায়, মাদক সেবনের জন্য তাজমুল নামের আরেক সহযোগীর মাধ্যমে গত ১৪ এপ্রিল বিকেলে বাড্ডার বাসা থেকে ডেকে মোটরসাইকেলে করে পাভেলকে নেওয়া হয় পল্লবীতে। পল্লবী স্বপ্ন নগর আবাসিক এলাকার পুকুরপাড়ে মাদকও সেবন করেন পাভেল। এরমধ্যে সন্ধ্যার দিকে ঘটনাস্থলে আসে মূল পরিকল্পনাকারী হাবিবসহ আরও কয়েকজন।
এরপর সবাই একসঙ্গে পাভেলকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় সবাই। স্থানীয়দের দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে পাভেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় গত ১৫ এপ্রিল পাভেলের মা পারুল বেগম বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে থানা পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে। সর্বশেষ ডিবির হাতে গ্রেপ্তার তিনজনসহ এ ঘটনায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।