রাজধানীর বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অভিযান পরিচালনার উদ্যোগের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী উৎপল বিশ্বাস।
পরে আইনজীবী অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে ডিএসসিসি নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর উদ্যোগ নেয়। এজন্য হরিজন কলোনিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ মোতায়েন করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সিটি করপোরেশনের এ চিঠিতে স্থানীয় কাউন্সিলরকে সহায়তা করতেও বলা হয়।
এরপর আজ হরিজন কলোনিতে আবার অভিযান শুরুর উদ্যোগ নিলে সেখানে বসবাসরত হরিজনদের পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ সিটি করপোরেশনের অভিযানের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।
এর আগে গত ১৩ জুন বংশালের মিরনজিল্লা হরিজন কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের ওপর এক মাসের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি বসবাসের বিকল্প ব্যবস্থা না করে হরিজনদের উচ্ছেদ না করতে নির্দেশ দেন আদালত।
এক রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
রুলে বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ অভিযান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এরপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে সিটি করপোরেশন। পরে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে ‘নো অর্ডার’ দেন।
আইনজীবীরা বলছেন, ব্রিটিশ আমলে ভারতের তেলেগুভাষী এলাকা থেকে আসা হরিজন সম্প্রদায়ের এই লোকজন শত বছরের বেশি সময় ধরে কলোনিটিতে বসবাস করে আসছেন।
মিরনজিল্লার সুইপার কলোনিতে বর্তমানে প্রায় চার হাজার লোক বাস করেন। এই কলোনির একটি অংশে আধুনিক কাচাবাজার নির্মাণ করতে চায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ জন্য সেখানে থাকা স্থাপনা উচ্ছেদে গত সোমবার গিয়েছিলেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। তারা হরিজন সম্প্রদায়ের তীব্র আপত্তি ও বাধার মুখে পড়েন। পরে তারা একটি দেয়াল ও কয়েকটি স্থাপনা ভেঙে চলে যান।
সিটি করপোরেশনের এই উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে সেখানে বিক্ষোভ করেন হরিজন সম্প্রদায়ের লোকজন।