ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় জমি বিক্রি করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেসসচিব নাঈমুল ইসলাম খান। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকা, বগুড়া ও রংপুরে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
এ ছাড়া নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। তবে এর মধ্যেই কমিশনের মাধ্যমে সাফকবলা (জমি, ফ্ল্যাট বা প্লট কেনাবেচা) দলিল করে জমি বিক্রি করেছেন নাঈমুল ইসলাম খান।
সূত্র জানিয়েছে, গত বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) ও রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) তিনি কুমিল্লার কান্দিরপাড় মৌজার বাগিচাগাঁও এলাকায় জমি বিক্রি করেন। একটি অংশের পরিমাণ ১.৭৫ শতাংশ ও অন্যটির পরিমাণ ২ শতাংশ।
কুমিল্লা সদর ভূমি অফিসের সহকারী খোসনেহার বেগম সাংবাদিকদের জানান, ঢাকার বনশ্রী এলাকার একটি বাসায় কমিশনের মাধ্যমে সাফকবলা দলিল হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় কমিশন গিয়েছিল।
জমি রেজিস্ট্রির দিন বনশ্রীর ওই বাসায় খোসনেহার বেগম কমিশনের সদস্য হিসেবে ও কুমিল্লা সদর ভূমি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রার দীপংকর চন্দ্র দাস উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় উপস্থিত ছিলেন নাঈমুল ইসলাম খানও। জমি দুটি কিনেছেন রুহুল আমিন নামে জনৈক ব্যক্তি। তবে তার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।
অন্য সাব-রেজিস্ট্রার লুৎফুন্নাহার লতা সাংবাদিকদের বলেন, নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে আইনগত বিধি-নিষেধ আছে কি না, সে বিষয়ে কোনো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা চিঠি পাইনি।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেসসচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
ব্যাংক হিসাব স্থগিত সংক্রান্ত বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত ব্যক্তি ও তাদের ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো হিসাব পরিচালিত হয়ে থাকলে, সেই হিসাবের লেনদেন মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ২৩ (১) (গ) ধারার আওতায় ৩০ দিনের জন্য স্থগিত থাকবে। এ ছাড়া তাদের নামে কোনো লকার সুবিধা থাকলে তার ব্যবহারও ৩০ দিনের জন্য বন্ধ থাকবে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে বৃহস্পতিবার বিকেলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নাঈমুল ইসলাম খানের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।