বগুড়ায় তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা আবদুল মতিন সরকারকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একই সঙ্গে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত দুই কোটি ২৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে বগুড়ার স্পেশাল জজ মো. শহীদুল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আবদুল মতিন সরকারের নামে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলাটি করেন বগুড়ার সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম। এ মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয় ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি।
আবদুল মতিন সরকার বগুড়া শহর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার মৃত মজিবর রহমান সরকারের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র রাখা এবং মাদক বিক্রির অভিযোগে ডজনখানেক মামলা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর নতুন করে একাধিক হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি।
দুদকের আইনজীবী পিপি আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবদুল মতিন সরকারের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৮ সালের মার্চ মাসে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ পাঠানো হয়। পরে ওই মাসেই স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দাখিল করেন আবদুল মতিন। সম্পদ বিবরণী অনুসন্ধান করে দুদক দুই কোটি ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৩১৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পায়। আবদুল মতিন এ সম্পদের মধ্যে এক কোটি ৪২ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৩ টাকার তথ্য গোপন করেন।
শুনানি ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তথ্য গোপনের অপরাধে তাকে তিন বছরের এবং জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আবদুল মতিন সরকার বগুড়ার আলোচিত ধর্ষণ এবং মা মেয়েকে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া কাণ্ডের মূলহোতা তুফান সরকারের বড় ভাই। ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তির কথা বলে এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন তুফান। পরে তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন নারী কাউন্সিলর এবং তুফানের লোকেরা ধর্ষণের শিকার ছাত্রী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালান। এরপর দুজনেরই মাথা ন্যাড়া করে দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ২৮ জুলাই রাতে মামলা করেন। আবদুল মতিনের ছত্রছায়াতেই তুফান বেপরোয়া জীবযাপন করতেন। বর্তমানে তুফান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।