ধর্ষণের শিকার মাগুরার ৮ বছরের শিশুটির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল করেছে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে এই গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে কফিন নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত মিছিল করেন। জানাজার নামাজ পড়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব তারেকুল ইসলাম।
গায়েবানা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। জানাজা শেষে তিনি বলেন, শিশুটির মৃত্যু আমাদের নাড়িয়ে দিয়ে গেছে। দ্রুত সময়ে এই ভয়াবহ হত্যার বিচার হবে, ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হবে। শিশুটির জন্য পুরো জাতি দোয়া করছেন। তার মৃত্যু এই ক্রান্তিকালে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এটা এই মুহূর্তে প্রয়োজন। আর কোনও শিশু যেন হারিয়ে না যায়। আমাদের বিচার ব্যবস্থা, আইন ব্যবস্থা সুপ্রতিষ্ঠিত হোক। আছিয়ার মতো আর কোনও মেয়ের সঙ্গে যেন এমনটা না ঘটে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ শিশুটির হত্যার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবো। এই ধর্ষণ এবং খুনের বিচার মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং ধর্ষকের সাহায্যকারীদের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আগামীর বাংলাদেশে ধর্ষণকে কেবল শারীরিক শ্লীলতাহানি হিসেবে নয়, হত্যার সমপরিমাণ নিকৃষ্ট অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।
এর আগে গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। পরদিন ৭ মার্চ তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সঙ্কটাপন্ন শিশুটিকে শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুর ১টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।