তিন’শ মানুষ ‘ভয়েজ অব ঝিনাইগাতী’র ঈদ উপহার পেয়েছেন
কামাই রোজকার করবার পাইনা এহন। শরীর চলে না, অসুখ বিসুখে। টানাপোড়েনে খুব কষ্ট কইরা রোজাগুলো পার করলাম। কখনো ভাবিনি এত গুইল্যা ঈদের বাজার আমি পামু। বাজারগুলো পাইয়া বহুত উপকার অইলো (হলো) বাপু। দোয়া করি আল্লাহ আইন্নে গোর (আপনাদের) ভালা করুক। কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী শালচূড়ার গ্রামের হাবিবুর মিয়া। হাবিবুর মিয়ার মতো আরও তিন’শ মানুষ ‘ভয়েজ অব ঝিনাইগাতী’র ঈদ উপহার পেয়েছেন।
২৮ মার্চ শুক্রবার দুপুরে উত্তরণ পাবলিক স্কুল মাঠে এসব উপহার তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল।
গত কয়েক বছর ধরেই শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময় ও ধর্মীয় উৎসবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে উপজেলার আড়াই শতাধিক অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মাঝে ঈদের উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
প্রবাসী বাংলাদেশি ড. জাফর ইকবালের আর্থিক সহায়তায় ঈদ উপহার হিসেবে পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারের জন্যে পোলাও চাল, সেমাই, চিনি, তেল, সাবান, পিঠা, মুড়ি ও ডাল দেওয়া হয়। উপহারসামগ্রী পেয়ে তারা খুবই আনন্দিত।
এসব উপহার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপত্বি করেন ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’র প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক মো. জাহিদুল হক মনির। এতে আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আল-আমীন, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ন আহ্বায়ক মো. আব্দুল মান্নান ও আদর্শ কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটের চেয়ারম্যান মো. ছালেহ আহাম্মদ।
আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, পবিত্র ঈদে গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে পারলেই ঈদ উদযাপন স্বার্থক এবং সুন্দর হবে। সরকারের পাশাপাশি দেশের বিত্তবানরা যদি একটু আন্তরিক এবং দয়ালু হন তাহলে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে ঈদ উদযাপন অত্যন্ত আনন্দময় হবে। আমরা প্রত্যাশা করব দেশের সরকার ও বিত্তবানদের আন্তরিকতায় প্রত্যেকটি উৎসব হবে সবার জন্যে অন্যরকম। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে ঈদ আনন্দ ছড়িয়ে দিতে সবাই যার যার অবস্থান থেকে যথাযথ দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের এ সংগঠন দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য নানারকম কাজ করে থাকে। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি এটা ভবেই আত্মতৃপ্তি পাচ্ছি। এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, কিছু কাজ আছে যা নিজের বিবেকের তাড়নায় করতে হয়। সে কাজগুলো জীবনে যে প্রশান্তি এনে দেয়, তা আরও নতুন করে ভালো কিছু কাজের উৎসাহ জোগায়। অবহেলিত মানুষের পাশে রাষ্ট্র্রের পাশাপাশি দেশ ও সমাজের সর্বস্তরের ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে তাদের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব। ‘ভয়েস অব ঝিনাইগাতী’র এ ধরনের কাজ দৃষ্টান্তমূলক।