শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চোরাকারবারী ও অবৈধ বালু উত্তোলনকারী বালু মাসুদ ওরফে ‘ডন মাসুদ’ গত ১৩ এপ্রিল পৃথক দুটি মামলায় জামিনে বের হয়ে এসেই তার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। এতে জনমনে ব্যাপক আতংক সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়কাল থেকেই ‘ডন মাসুদ’ জেলার শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের গরু চুরিসহ বিভিন্ন চোরাকারবারীর সাথে জড়িত ছিলেন। সেই সাথে পাহাড়ি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতেন।
৫ আগস্টের পরে ফ্যাসিস্টরা পালিয়ে গেলেও ‘ডন মাসুদ’ তার রূপ পাল্টে ফেলে। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নাম ভাঙিয়ে বনে যান বিএনপি নেতা। সেই সাথে চালিয়ে যান চোরাকারবারী ও অবৈধ বালু ব্যবসা।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি দেন। একই সাথে তার বিরুদ্ধে হামলা ও বালু মহালের রশিদ জাল জালিয়াতির মামলা দায়ের করে স্থানীয়রা। এতেও সে ক্ষান্ত না হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। দিনরাত ২৪ ঘন্টা অবৈধ বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়া নানা সংবাদ প্রচারও হয়।
স্থানীয় জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অদৃশ্য শক্তির কারণে তাকে ধরতে পারছিল না। এক পর্যায়ে গত ৫ এপ্রিল র্যাব-১৪ ডন মাসুদকে গ্রেপ্তার করে শ্রীবরদী থানা পুলিশে সোপর্দ করে। পরেরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এদিকে তার গ্রেপ্তারের খবরে স্থানীয় সচেতন মহল তার শাস্তির দাবিতে শেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এবং শ্রীবরদী উপজেলায় পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
কিন্তু আইনের ফাঁক গলে ‘ডন মাসুদ’ ১৩ এপ্রিল উল্লেখিত পৃথক মামলা দুটি থেকে জামিনে বের হয়ে আসেন। জামিনে বের হয়ে এলাকায় আসার পর ডন মাসুদের সাঙ্গোপাঙ্গরা ফুলের মালা দিয়ে এবং মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে তাকে শ্রীবরদী শহর থেকে গ্রামে বাড়ি কর্ণঝড়ায় নিয়ে যায়। আর জেল থেকে বেরিয়ে এসেই তিনি তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও আন্দোলনকারীদের নানাভাবে হত্যার হুমকি ও ভয় দেখিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ডন মাসুদ এর হুমকির বিষয়ে ‘আমাদের শ্রীবরদী’ নামে একটি ফেইসবুক পেইজে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়া মাসুদের একটি ছবিসহ লেখা হয়েছে, ‘অবৈধ বালু ব্যবসায়ী ডন মাসুদ মাত্র ৮ দিনের মাথায় জামিনে মুক্ত’ এতে সাধারণ জনগণের মাঝে হতাশা এবং আতংকের ছাপ দেখা যাচ্ছে এবং আন্দোলনকারীদের প্রাণনাশের নানানভাবে হুমকি দিচ্ছে।