শেরপুরের শ্রীবরদীতে মৎস্য খামার থেকে ২ শিশুর বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ক্রমেই রহস্য দানা বাঁধছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ২ শিশুর মরদেহ উদ্ধারের দ্বিতীয় দিনেও এলাকায় চলছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে শিশু দুটির মরদেহ’র আশেপাশেও তাদের পোশাক না থাকায় বিষয়টি মূলত অপমৃত্যু না হত্যা তা নিয়েই ওই মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। এদিকে ওই ২ শিশুর মরদেহ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে পারিবারিক করবস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীবরদী উপজেলার ছনকান্দা গ্রামে গেলে কথা হয় নিহত ২ শিশুর পরিবারসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে। ওইসময় মৎস্য খামারের পাশের বাড়ির অধিবাসী সাইফুল ইসলাম (৪৫) জানান, তিনি মঙ্গলবার দুপুরে মাছের খামারের পুকুরে শিশু সকাল (৭) ও স্বপ্না (৬)কে গোসল করতে দেখেছিলেন। অথচ তিনিই বুধবার বলেছিলেন, মঙ্গলবার মাছের প্রজেক্টে তিনি কাউকে গোসল করতে দেখেননি। তিনি কেন এমন বিভ্রান্তিমূলক সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বুধবার পুলিশের সামনে ভয়ে ওই কথা বলেছিলাম। খামারের মালিক মো. মোস্তুফা বলেন, আমি ১৭ জুন মঙ্গলবার শিশু দুজনকে খামারে গোসল করতে দেখি। পরে তাদেরকে চলে যেতে বলেছি। কিন্তু এলাকায় নিখোঁজের পর মাইকিং করা হলেও কেন তাদের পরিবারকে ওই তথ্য জানানো হয়নি- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা জানতে পারিনি যে, এতদূর থেকে এখানে গোসল করতে আসবে। স্থানীয়দের এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য আরও নতুন রহস্যের জন্ম দিয়েছে। এমন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য, পারিপার্শি¦ক অবস্থা, প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে মাছের খামারে মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের ধারণা, এটা একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হতে পারে। এ নিয়ে এলাকায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, ওই ঘটনায় মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে স্বপন মিয়া বাদী হয়ে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহ’র ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনসহ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, শ্রীবরদী উপজেলার তিনআনী ছনকান্দা এলাকার মো. সেলিম মিয়ার মেয়ে সকাল আক্তার ও অটোরিকশাচালক স্বপন মিয়ার মেয়ে স্বপ্না খাতুন বাড়ি থেকে নিখোঁজের ২০ ঘন্টা পর বুধবার সকালে পার্শ্ববর্তী ছনকান্দা এলাকার মো. মোস্তফা মাছের খামারের একটি পুকুর থেকে তাদের বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা ২জনই স্থানীয় একটি নুরানী মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে ১৯ জুন, রোববার বিকেলে শিশু সকাল ও স্বপ্নাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।