শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বিকেনগরে সরকারি ঘর বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারম্যান ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে এ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ২০১৭/২০১৮ অর্থবছরে যাদের জমি আছে ঘর নেই তাদেরকে ঘর উত্তোলনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের তালিকা অনুযায়ী এ ঘর বিতরণ করা হয়। বিজয় নগরের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান অন্তত ৫শ পরিবারের কাছ থেকে ১০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে লক্ষ লক্ষ টাকা এলাকা থেকে হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তবে ভুক্তভোগীরা জানান, স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যানের কাছে টাকা চাইতে গেলে টাকা ফেরত তো দূরের কথা উল্টো গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন। তাই ভুক্তভোগীদের দাবি চেয়ারম্যান ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাস্তির আওতায় আনা। এর পাশাপাশি ঘর অথবা টাকা ফেরত চেয়েছেন গরীব অসহায় মানুষেরা।
ইয়াসিন মৃধা, লিটন মন্সী, তবারক হাওলাদার, রুমা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমরা ঘর পেয়েছি কিন্তু অগ্রীম ২০ টাকা দিতে হয়েছে এর পাশাপাশি মালামাল আনার জন্য ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। এতে করে আমাদের মোট ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা প্রতিটি ঘর প্রতি খরচ করতে হয়েছে। সুদে টাকা এনে ঘরের কাজ করতে হয়েছে বলে জানান ঘর মালিকরা।
সাবিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে, আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে। তার মাঝে ঘরের জন্য ২১ হাজার টাকা চেয়ারম্যান ও তার ভাইদের কাছে দিয়েছি। আমাদের টাকাগুলো ফেরত দিলে ছাগল কিনে পালতে পারতাম। তা হলে কিছুটা সহযোগীতা হতো।
চন্দ্রবান বিবি বলেন, আমি মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ ও ভিক্ষা করে খাই। আমার থাকার ঘর নাই, আমাকে ঘর দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান। কিন্তু দুই বছর পার হয়ে গেলেও আমাকে ঘর দেয়নি চেয়ারম্যান। আর আমার কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছে। টাকা চাইতে গেলে গালিগালাজ করে। আমি চেয়ারম্যানের বিচার চাই, আর আমার টাকা ফেরত চাই।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে বিকেনগর ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, এটা ষড়যন্ত্র করে আমার বিপক্ষের লোকজন মিথ্যা কথা ছড়িয়ে দিয়েছে। আমাকে সমাজে ছোট করার জন্য এ অপপ্রচার করছে। আমি বা আমার ভাইদের মধ্যে কেউ টাকা নেওয়ার সাথে জড়িত না। তিনি দাবি করে বলেন, এ ইউনিয়নে ১৬০টি ঘর পেয়েছি। একজনের কাছ থেকেও টাকা নেওয়া হয়নি।
জাজিরা উজেলা নির্বহী অফিসার মো. আসরাফুজ্জামান ভূইয়া বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি, তদন্ত করে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। ঘর বরাদ্দর সময় আমি আমি এখানে ছিলাম না। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখবো।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, যাদের জমি আছে ঘর নেই তাদের মাঝে ঘর বিতরণের অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি আমলে নিয়ে এ বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।