ads
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০১:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম
প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবীন কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্বৈরাচারের দোসর আরও ৩৯ আমলার দ্রুত অপসারণ দাবি জুলাই ঐক্যের ধর্ষণের পর গর্ভপাত: সালিশে ব্যর্থ, মামলাও নেয়নি পুলিশ হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের ব্যয় দিনে ২০০ মিলিয়ন ডলার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা বিপজ্জনক নজির: জাতিসংঘে চীনা দূত বেদখল খাসজমি উদ্ধারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ভূমি উপদেষ্টার বান্দরবানের লামায় সেনাবাহিনীর অভিযান, ৯ সন্ত্রাসী আটক দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু শ্রীবরদীতে মাছের ঘেরে ২ শিশুর মরদেহ, দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড!

করোনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হয়েছে

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০
  • ৩১ বার পঠিত

মিয়ানমারে নৃশংস সহিংসতার ফলে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার তিন বছর পরে, বিশ্বব্যাপী মহামারীর কারণে স্কুল ও সকল প্রকার শিক্ষার সুযোগ সুবিধা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা শিশুরা এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে মনে করছে শিশু অধিকার সংস্থা এডুকো।

মহামারী চলাকালীন রোহিঙ্গা শিশুদের প্রয়োজনীয়তা ও সমস্যা সম্পর্কে জানার জন্য এডুকোর সহায়তায় স্থানীয় সংস্থা স্কাস/এসকেইউএস-এর নেতৃত্বে করা সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ শিশু পর্যাপ্ত শিক্ষামূলক উপকরণ ছাড়াই নিজেরা লেখাপড়া করছে বা শিক্ষকদের খুব অল্প নির্দেশনার সহায়তায় স্কুল বন্ধের সময়টা পার করছে যাতে তারা ঘরে বসে শিখতে পারে।

এডুকো কক্সবাজারের ইমারজেন্সি রেস্পন্স মিশনের প্রধান মতিউর রহমান বলেন, ‘তিন বছর আগে তারা যে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল, তা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা শিশু এবং তাদের পরিবারসমূহ শরণার্থী শিবিরগুলোতে নতুন করে শুরু করার জন্য কষ্ট সহ্য করেছে। মহামারীর আগেও কিশোর-কিশোর এবং যুবকদের জন্য শিবিরগুলোতে প্রাসঙ্গিক শিক্ষা, বৃত্তিমূলক এবং জীবন দক্ষতা শিক্ষার সীমিত সুযোগ ছিল। তবে এই মহামারী বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে শিশুদেরকে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার প্রচেষ্টাকে হুমকির সম্মুখীন করছে।’

রহমান আরও বলেন, ‘ঘরে ঘরে শিক্ষার কৌশল রপ্ত করার লক্ষ্যে শিশুদের সহায়তায় আমাদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন এবং শিশুরা যাতে রেডিও এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞানকে আরও বিকশিত করতে পারে সেদিকেো ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। আমরা ভীত যে শিবিরগুলোতে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার হ্রাস এবং সীমিত শিশু সুরক্ষা পরিষেবা তাদের জোরপূর্বক বিবাহ, শিশুশ্রম এবং শারীরিক ও যৌন সহিংসতার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে।’

কক্সবাজারের একটি শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গা কিশোরী ১২ বছর বয়সী কাসমিন আরা এডুকোকে একটি সাক্ষাত্কারে জানায়,
‘করোনাভাইরাস মহামারীর আগে, আমি সেলাই শেখার জন্য একটি শিক্ষণ কেন্দ্রে যেতাম। আমি সত্যিই সেলাই উপভোগ করি এবং সেখানে অনেক ধরণের কাপড়ের নকশা শিখেছি। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সমস্ত শিক্ষার কেন্দ্র বন্ধ। টেলরিং সেন্টারে আমার বন্ধুদের কথা অনেক মনে পরে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব না ঘটলে আমি এতদিনে দর্জি হয়ে যেতাম।’

আরেক রোহিঙ্গা কিশোরী জোসমিন আরা জানায়, ‘করোনাভাইরাস মহামারী হওয়ার আগে, আমার বাবা একজন দিনমজুর হিসাবে শিবিরের বাইরে কাজ করতে যেতেন। আমাদের চাহিদা পূরণের জন্য এটিই আমাদের জীবিকার উৎস ছিল। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পুরো অঞ্চলটি লকডাউন হয়ে গিয়েছে। আমরা আমাদের প্রাথমিক চাহিদা মেটাতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছি। আমি উদ্বেগিত ও অসহায় বোধ করি কারণ আমাদের এলাকায় মধ্যে ঠিক কী হবে তা আমরা জানি না। আমরা ইতিমধ্যে ২০১৭ সালে একটি সংকটের মুখোমুখি হয়েছি। আবারও অন্য একটি সংকট দেখা দিতে চলেছে।’

এক রোহিঙ্গা অভিভাবক জানান, ‘আমরা আমাদের নতুন ঠিকানা, আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রটি পেয়েছি, তবে এখন আমাদের একটি নতুন বিপদের মুখোমুখি হয়েছে, করোনভাইরাস এবং তা ভয়াবহ। আমাদের বাচ্চাদের জন্য অর্থ উপার্জন এবং খাবার কেনা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।’

২০১৮ সাল থেকে এডুকো কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সহায়তা করে আসছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা মেয়েরা শিবিরগুলোতে সুরক্ষা পরিষেবা পেতে পারে। করোনাভাইরাস যখন বাংলাদেশে আঘাত হানে তখন রোহিঙ্গা এবং হোস্ট কমিউনিটিকে করোন ভাইরাস থেকে রক্ষায় সহায়তা করার জন্য এডুকো এবং চাইল্ডফান্ড কোরিয়া তৎক্ষণাৎ কক্সবাজারে কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেস্পন্স মিশন শুরু করে। এখনও অবধি, এডুকো এবং চাইল্ডফান্ড কোরিয়ার যৌথ উদ্যোগে েআড়াই হাজার পরিবারের ১৫ হাজার শিশুকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী (মাস্ক, সাবান, ডিটারজেন্ট এবং স্যানিটাইজার) এবং ৫০০ পরিবারকে নিঃশর্ত নগদ সহায়তা (৫,৫০০ টাকা) দিয়েছে, উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কক্সবাজারের সিভিল সার্জন স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ২০০টি মেডিকেল-গ্রেডের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) বিতরণ করেছে। হোম এডুকেশন এবং ছোট গ্রুপ ওরিয়েন্টেশন মিটিংয়ের মাধ্যমে এডুকো প্রায় ১২ হাজার শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ এবং শিশু সুরক্ষা বার্তার উপর নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করেছে।

সারা বাংলাদেশ জুড়ে, এডুকো, খাদ্য সামগ্রী (যেমন, চাল এবং ডাল), স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী এবং প্রতিরক্ষামূলক উপকরণ বিতরণ, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে নগদ সহায়তা প্রদান এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কিত তথ্য প্রচার করে কমপক্ষে ১ লাখ শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের পাশে দাঁড়িয়েছে।

এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল হামিদ জানান, ‘বাংলাদেশে, দৈনিক মজুরি উপার্জন করে এমন প্রায় ৯০ শতাংশ লোক অনানুষ্ঠানিক চাকরির বাজারে নিয়োজিত রয়েছে। প্রতিদিন আমরা দেখছি যে অনেকেই চাকরি হারাচ্ছে যা শিশুদের অনাহার থাকার ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে। করোনাভাইরাস সংকট শুরু হওয়ায় দেশে শিশু, মহিলা এবং মেয়েদের উপর সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করছে। তবে আমরা যদি একত্র হয়ে আশা ও সাহসের সাথে একে অপরকে সহায়তা করি তবে আমরা এই প্রতিবন্ধকতাগুলো অতিক্রম করে উঠতে সক্ষম হব।’

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102