সাভারে চাকরি দেওয়ার নাম করে এক গৃহবধূকে দিনের পর দিন ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে সাদিকুর রহমান সেলিম নামের ইতালিফেরত এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে সাদিকুরকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আটক করেছে পুলিশ। সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
ওই গৃহবধূর অভিযোগ, হুমকি আর ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছেন তিনি। অর্থ ও প্রভাবশালীদের দাপটে নাজেহাল হয়ে তিনি প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন। এর মধ্যেই গত রোববার ওই নারী ফোন করেন জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ। সেখান থেকে তাঁকে সাভার মডেল থানার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার পর থানায় গিয়েও আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি।
এদিকে, সোমবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে আগেই পালিয়ে যান সাদিকুর রহমান। পরে স্বজনদের মাধ্যমে তাঁকে ডেকে নিয়ে আটক করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, তাঁর স্বামী পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। ফরিদপুরের মধুখালী থানাধীন একটি গ্রাম থেকে সাভারে আসার পরই মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে থমকে যায় তাঁদের জীবন। স্বামীর আয় না থাকায় নিজেই কাজের সন্ধানে বের হলে এক ব্যক্তির মাধ্যমে পরিচয় হয় সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের ইতালিফেরত প্রবাসী সাদিকুর রহমান সেলিমের সঙ্গে।
চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাদিকুর রহমান দিনের পর দিন তাঁর বহুতল ভবনের সাততলায় নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ ওই নারীর।
ভুক্তভোগী ওই নারীর দাবি, প্রতিবাদ করার পর থেকে তিনি প্রভাবশালীদের ভয়ভীতি ও হুমকির মুখে এলাকা ছেড়ে চলে যান আশুলিয়ায়। এর মধ্যে নানাভাবে তাঁকে উত্ত্যক্ত ও নাজেহাল করায় শেষমেশ তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর শরণাপন্ন হন। সেখান থেকে তাঁকে সাভার মডেল থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলে সেখানে তিনি অভিযোগ করেন। তবে সেই অভিযোগ পুলিশ এখনো মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি বলে দাবি তাঁর।
ওই গৃহবধূ বলেন, ‘চাকরি দেওয়ার কথা বলে আমাকে সাভারে ডিবি অফিসের সামনে সাদিকুর রহমান সেলিম তাঁর মালিকানাধীন বহুতল ভবনের সাততলায় নিয়ে যান। ওখানেই চাকরির বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হবে জানিয়ে আমাকে ধর্ষণ করেন। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করার পর থেকেই আমাকে নানাভাবে নাজেহাল করতে থাকেন।’
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে ওই নারীর সঙ্গে প্রবাসীর যোগাযোগ ও সম্পর্ক স্থাপনের নানা আলামত পাওয়া গেছে। এমনকি তিনি ওই নারীকে সঙ্গে করে ইসলামী ব্যাংক সাভার শাখায় নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর নামে একটি হিসাব খুলে সেই নারীর হিসাবে নগদ সাড়ে চার লাখ টাকা জমা করে আবার উত্তোলন করেও নিয়ে গেছেন। এর মাধ্যমে ওই নারীর সঙ্গে অভিযুক্তের যোগাযোগের আলামত নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে আটক হওয়ার আগে যোগাযোগ করা হলে প্রবাসী সাদিকুর রহমান সেলিম এ বিষয়ে কোনো সংবাদ পরিবেশন না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমরা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করছি।’
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’