সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পিস্তল হাতে ধরা বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের আলোচিত সাংসদ রেজাউল করিম বাবলুর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুকে কালো রঙের নতুন ঝকঝকে পিস্তল হাতে হাসিমুখে তোলা তার ছবিটি ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে নানান বিতর্কের।
তবে সাংসদ রেজাউল করিম দাবি করেছেন, নিরাপত্তার জন্যই তিনি অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন। সপ্তাহখানেক আগে রাজধানীর একটি অস্ত্রের দোকান থেকে তিনি ৮০ হাজার টাকায় একটি বিদেশি পিস্তল কিনেছেন। দোকানে বসে পিস্তল নাড়াচাড়া করার সময় তার সঙ্গে থাকা কোনো কর্মী মুঠোফোনে ছবি তুলে তা তাদের ফেসবুক ওয়ালে আপলোড দিয়েছেন।
সাংসদ বলেন, লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্রের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড দিতে আইনি কোনো বাধা নেই। তার সঙ্গে থাকা কোনো কর্মী তাকে না বলেই ফেসবুকে দিয়েছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আর তাকে অপছন্দ করা কিছু সাংবাদিক এই ছবি ভাইরাল করে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, সাংসদ রেজাউল করিমের নামে কয়েক মাস আগে একটি পিস্তলের লাইসেন্স প্রদানের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন তাকে পিস্তলের লাইসেন্স দিয়েছে কি না, তা জানা নেই।
বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবদুল মালেক বলেন, সাংসদ রেজাউল করিম অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা প্রদর্শন অশোভন।
টিআইবির নাগরিক সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বগুড়ার সভাপতি মাসুদার রহমান বলেন, অস্ত্র হাতে তোলা সাংসদ রেজাউল করিমের ছবি ফেসবুকজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বৈধ অস্ত্র হলেও একজন সাংসদের এভাবে অস্ত্র প্রদর্শন কোনোক্রমেই শোভনীয় নয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একজন সাংসদের অস্ত্র প্রদর্শনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়াটা অত্যন্ত অশোভন কাজ। নিজের লাইসেন্স করা অস্ত্র জনসমক্ষে প্রদর্শন করাটা অত্যন্ত হীন অভিব্যক্তির প্রতিফলন, এ ধরনের অশোভন কাজ গণতন্ত্র ও সুশাসনের অন্তরায়।
মজুমদার আরো বলেন, জনগণ তাকে ভোট দিয়েছেন জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য, অস্ত্র কেনার জন্য নয়। একজন সাংসদের নিরাপত্তার জন্য বড় শক্তি হওয়া উচিত জনগণ, জনগণই সব শক্তির উৎস, জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থনই বড় শক্তি। সাংসদ নির্বাচিত হয়ে অস্ত্র কিনে তার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া অত্যন্ত অবিবেচক কাজ।