সংঘর্ষের কারণে পণ্ড হয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান। এসময় যুবলীগের প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার (১১ নভেম্বর) বিকালে মিরসরাই মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠটি পরিণত হয় বড় সমাবেশে। তবে নেতাকর্মীদের উদ্ধত আচরণ, হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সমাবেশ বন্ধ করে দেন প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান রুহেল।
জানা গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার বিকালে উপজেলা সদরের মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সামাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মাহবুবুর রহমান রুহেল। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি’র মেঝো ছেলে।
সমাবেশের এক পর্যায়ে স্লোগান-পাল্টা স্লোগান দেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় এক পক্ষ ওপর পক্ষকে পাথর, লাঠি ও সমাবেশস্থলে থাকা চেয়ার দিয়ে হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন যুবলীগ কর্মী আহত হন। পরে মাইকে বারবার ঘোষণা দিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করতে না পেরে প্রধান অতিথি নিজেই সমাবেশ বন্ধ ঘোষণা করেন।
এদিকে হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলায় মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মাইনুর ইসলাম রানাসহ প্রায় ২০ জন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী আহত হন। তাদেরকে স্থানীয় মাতৃকা ও সেবা আধুনিক নামের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
আহতরা হলেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মাইনুর ইসলাম রানা, যুবলীগ কর্মী মো. শাকিল, মিয়াখান, নুরুচ্ছাপা, হৃদয়, ইমন, নোমান, আমজাদ ও আবুল কালাম। এদের মধ্যে কালামের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ভর্তি করানো হয়।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইব্রাহীম খলিল ভুঁইয়া বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে পণ্ড করার জন্য বহিরাগতরা হামলা চালায়। এসময় যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী মাইনুর ইসলাম রানাসহ ২০-২৫ জন যুবলীগ নেতাকর্মী আহত হন। আমি দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবী জানাচ্ছি।
উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন মান্না বলেন, সমাবেশ চলাকালে মাইনুর ইসলাম রানা ও ইব্রাহীম খলিল ভূঁইয়া মিছিল সহকারে প্রবেশ করে। এসময় তারা মঞ্চের সামনে আসার চেষ্টা করলে হট্টোগোল সৃষ্টি হয়। যা এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষে ৪-৫ জন যুবলীগ কর্মী আহত হয়েছে। পরর্বতীতে প্রধান অতিথি সমাবেশ বন্ধ ঘোষণা করে দেন।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান বলেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সম্মেলনে দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি স্লোগানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। এসময় সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই) এর নেতৃত্বে মিরসরাই থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত কোনও পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে।
পরিদর্শক (অপারেশন) দিনেশ দাশ গুপ্ত জানান, আহত কয়েকজন সেবা আধুনিক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। ঘটনার কারণ জানতে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।