বিপুল অর্থ পাচার করে বিদেশে পালিয়ে থাকা এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারকে গ্রেফতার ও দেশে ফেরাতে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত একটি ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন বলে জানান ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও ঢাকার জেলা প্রশাসককে ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। পিকে হালদার বিষয়ে পদক্ষেপ লিখিতভাবে হলফনামা আকারে দুদক চেয়ারম্যানকে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পিকে হালদার জালিয়াতির মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে নামে-বেনামে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বের করে নেন। এক পর্যায়ে তিনি গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
ইন্টারন্যাশনাল লিজিং গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেয়ায় একাধিক গ্রাহক আদালতের শরণাপন্ন হন। পরে হাইকোর্ট প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ পরে দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিলে হাইকোর্ট চলতি বছরের মার্চে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেন সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খানকে।
এক পর্যায়ে পিকে হালদার দেশে ফিরে অর্থ ফেরত দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তার আগ্রহের প্রেক্ষিতে অর্থ উদ্ধারের জন্য আদালতের জিম্মায় ও তত্ত্বাবধানে তাকে নির্বিঘ্নে দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। গত ৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ পিকে হালদার কবে, কখন ও কোন ফ্লাইটে বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন, এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানাতে বলেন।
তখন দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে (ইকে ৫৮২) ২৫ অক্টোবর সকাল ৮টা ১০ মিনিটে পিকে হালদারের দেশে ফেরার কথা আদালতকে জানানো হয়। এই ফ্লাইট সূচি উল্লেখ করে নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আরেকটি আবেদন করেছিল ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। এর শুনানি নিয়ে গত ২১ অক্টোবর পিকে হালদার বিমান থেকে নামা মাত্রই গ্রেফতার করে তাকে উপযুক্ত আদালতে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু পিকে হালদার দেশে ফেরেননি।