বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেছেন, পুরান ঢাকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামফলক লাগিয়ে দিয়ে আসবেন আপনি নিজ হাতে। না হয় ক্ষমতা পরিবর্তন হলে, আপনারা রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে যেসব স্থাপনা বানিয়েছেন, সেসব ভাঙচুর হবে, তা প্রতিরোধ করতে পারবেন না।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পুরান ঢাকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম পুনর্বহালের দাবিতে এক মানববন্ধনে একথা বলেন তিনি।
গয়েশ্বর বলেন, সাদেক হোসেন খোকা যখন ঢাকার মেয়র ছিলেন, তখন রাশেদ খান মেনন, মেজর রফিকুল ইসলাম, সেলিনা হোসেনসহ আওয়ামী লীগের অনেকের নামে সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করেন। তিনি কোনো জাত দেখেন নাই, দল দেখেন নাই। তিনি দেখেছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
তিনি বলেন, এদের নামে যদি সব স্থাপনা থাকে, তাহলে জিয়াউর রহমানের নাম স্থাপনা থেকে কেন মুছতে হবে। যদি শহীদ জিয়ার নাম মুছতে হয়, তাহলে আগে রাশেদ খান মেননসহ সবার নাম মুছেন।
তিনি আরো বলেন, এখনো সময় আছে, স্বেচ্ছায় যদি জনগণের ক্ষমতা তাদের কাছে হস্তান্তর করেন, তাহলে জনগণ আপনাকে ক্ষমা করবে। তা না করলে জনগণ যদি টেনে হিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামায়, তাহলে আপনার মান ইজ্জত থাকবে না।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আগামী দিনে যারা ক্ষমতায় আসবে, তা ভাঙতে কত হাজার কোটি টাকা লাগবে। রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে বানাচ্ছেন, সেগুলো রক্ষায় ইতিহাসে হাত দেবেন না। ইতিহাস তার জায়গায় থাকতে দেন। না হয় আপনারাও মুছে যাবেন। যাদের রক্তে এদেশ স্বাধীন হয়েছে, তাদের ইতিহাস বিকৃত করবেন না। তিনি বলেন, ২৬ মার্চ পালন করা হয় শহীদ জিয়াউর রহমানের কারণে। শহীদ জিয়াই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ১৮ কোটি মানুষের হ্রদয়ে শহীদ জিয়ার নাম। চাইলেই মানুষের হ্রদয় থেকে মুছা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একটি ইতিহাস। আজ বিজয়ের মাসের দ্বিতীয় দিন। ৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের মানুষ বিজয় দিবস উদযাপনের জন্য যার যার জায়গা থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ৫০ বছর পূর্তি পালন করবেন।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অযাচিতভাবে স্বাধীনতার চেতনায় যিনি বিশ্বাস করেন না, যিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না, তাকে স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী খেতাব দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই। দশ মাস বয়স হলো করোনার। ১০ মাসের মধ্যে ১০ মিনিটের জন্যও প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাসভবন থেকে বের হন নাই। তাঁর নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি ঘরের বাইরে হন নাই। কিন্তু ১৮ কোটি মানুষ তো নিরাপত্তার স্বার্থে ঘরে বসে থাকতে পারে নাই। আমাদের অনেক সিনিয়র নেতা করোনায় প্রাণ দিয়েছেন। এখনও করোনায় ভুগছেন অনেকে।
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল ও সহ-দফতর সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।