জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে।
রোগীর স্বজন ও চিকিৎসকরা জানায়, শুক্রবার দুপুরে শহরের ইকবালপুর এলাকার এক মসজিদ নামাজ পড়তে যান বৃদ্ধা করিমন বেগম (৬৫)। তিনি মসজিদের দোতলা থেকে পড়ে গুরুতর হন। পরে স্বজনরা তাঁকে নিয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। এ সময় করিমন বেগমের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় ওই রোগীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে স্বজনরা।
এসময় রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত স্বজনরা জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকসহ স্টাফদের ওপর হামলা করে। খবর পেয়ে ইন্টার্ন চিকিসৎসকরা ঘটনাস্থলে এলে মৃত ব্যক্তির স্বজন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মধ্যে সংর্ঘষ বেঁধে যায়। এ সময় হামলায় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক চিরঞ্জিব সরকার, ইন্টার্ন চিকিৎসক হাবিবুল্লাহ, মৃত রোগীর দুই স্বজন শহিদুল ও জিহাদ আহত হন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতেই ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আবারো রোগীর স্বজনদের মারধর করলে মৃত রোগীর মেয়েজামাই মো. সাইদুর ইসলাম আহত হন। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৃত করিমন বেগমের ভাতিজা শহিদুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার চাচি করিমন বেগমকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক তাঁকে মহিলা ওয়ার্ডে পাঠানোর পর তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ সময় ওই ওয়ার্ডে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় আমরা পাশের পুরুষ ওয়ার্ডে যাই। কিন্তু সেখানেও অক্সিজেন ছিল না। পরে অক্সিজেনের অভাবে আমার চাচির মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে চিকিৎসকরা আমাদের ওপর হামলা করে।’
জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক রিয়াদ মাহমুদ বলেন, ‘জুমার নামাজের পর এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসকের ওপর রোগীর স্বজনরা হামলা করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় মৃত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তারা আমার ওপরও হামলা চালায়।’
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।