বিকৃত যৌনাচারের শিকার হয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছেন রাজধানীর মাস্টারমাইন্ডের ‘ও’ লেভেলের স্কুলছাত্রী আনুশকাহ নূর আমিন। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) ফরেনসিক চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ এ তথ্য দেন।

ইফতেখার ফারদিন দিহানের গ্রামের বাড়ি রাজশাহী জেলার দুর্গাপুরের রাতুগ্রামে। তাদের বাবা আবদুর রউফ সরকারের আদি নিবাস রাজশাহী জেলার দুর্গাপুরের রাতুগ্রামে। অবসরপ্রাপ্ত সাব-রেজিস্ট্রার আবদুর রউফ সরকার ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি তার বড় ছেলে সুপ্তকে নিয়ে গ্রামে থাকেন। আর মা সানজিদা সরকার শিল্পীর সঙ্গে দিহান ও তার মেজ ভাই নিলয় ঢাকায় থাকেন। নিলয় ব্যাংকে চাকরি করেন।

দিহানের বড় ভাই সুপ্ত সরকারের বিরুদ্ধেও রয়েছে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ। ২০০৯ সালে সুপ্ত ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রুনার মুখে বিষ ঢেলে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে রুনার মা থানায় মামলা করেছিলেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় আসামিদের শাস্তির দাবিতে রুনার মরদেহ নিয়ে রাজশাহীতে মিছিল হয়েছিল। পরে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তা আপসে মীমাংসা করা হয়েছে।

স্থানীয়দের মতে দিহানের বড় ভাই সুপ্ত মাদকসাক্ত ছিলেন।

নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে ওই মামলার এক নারী সাক্ষী জানান, বিয়ের পর থেকেই রুনাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হতো। শেষে তার মুখে জোর করে বিষ ঢেলে দেওয়া হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। দুই দিন পর রুনা হাসপাতালে মারা যান। আমরা তার মরদেহ নিয়ে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করি। রুনার স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের শাস্তির দাবি জানাই। মামলাটা চলছিল। পরে তারা টাকা দিয়ে মীমাংসা করে নেয়। এরপর পুলিশ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়।

এদিকে আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন দিহান। গ্রুপ স্টাডির কথা বলে আনুশকাকে কলাবাগান লেক সার্কাসের বাসায় ডাকেন তিনি। তার সঙ্গে আনুশকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। এই বন্ধুত্বের বিষয়ে তাদের দুই পরিবারও জানতো। ওই কিশোরীর সঙ্গে দিহানের পরিচয় হয় তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে। যা একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়।

দিহান ওই কিশোরীর চেয়ে দুই বছরের বড়। গত বছর ম্যাপল লিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে ‘ও’ লেভেল শেষ করে দিহান। এখন সে জিইডি’র প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।

এছাড়া দিহানের মা শিল্পীও ঢাকায় বেপরোয়া চলাফেরা করেন বলে জানা গেছে।