মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসের হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী এগিয়ে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্র অভিমুখে। গুয়েতেমালার সেনাবাহিনী আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও দেশটিতে প্রবেশ থেকে থামাতে পারেনি দলটিকে। প্রায় আট হাজার সদস্যের ওই বিশাল দল ঠেকাতে এবার প্রস্তুত মেক্সিকোও।
এদিকে যুক্তরাষ্টের সীমান্তে কোনো ধরনের অবৈধ অনুপ্রবেশ মেনে নেওয়া হবে না বলে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।
নিরাপত্তা বাহিনীর সব বাধা ভেদ করে গুয়েতেমালার সীমান্ত দিয়ে রোববার হু হু করে ঢুকে পড়ে হন্ডুরাসের অভিবাসন প্রত্যাশীর বিশাল একটি দল। লক্ষ্য মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র।
অপরাধ, দুর্নীতি আর দারিদ্র থেকে মুক্তির প্রত্যাশায় তাদের এই দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে চলা। এবারের দলে রয়েছেন আট হাজারের বেশি মানুষ।
কয়েকজন অভিবাসন প্রত্যাশী বলেন, ‘শুরুতে অনেক ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু যখন দেখলাম মিছিলটা সত্যিই বিশাল আর সেখানকার মানুষগুলো হাসিখুশি, আশাবাদী আর সংঘবদ্ধ, তখন আর কোন দ্বিধা দন্দ কাজ করেনি। আমরা গুয়েতেমালার ভেতর ঢুকে পড়েছি। আমার বিশ্বাস, সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আমাদের এই যাত্রা সফল হবেই।’
‘যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রথমেই চাকরি খুঁজবো। পরিবারকে নিয়ে দিনের পর দিন অভাব অনটন দেখছি। তাদের জন্য কিছু করতে চাই।’
‘এই অভিবাসন প্রত্যাশীদের থামাতে এখনও আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গুয়েতেমালা সরকার। দাঙ্গা পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও রয়েছে কঠোর অবস্থানে।’
এ বিষয়ে সীমান্তরক্ষীরা জানান, ‘অভিবাসীদের দমাতে গেলে হঠাৎই যেন নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ বেঁধে যায়। আমরা জানতে পেরেছি, বিশাল ওই দলের মধ্যে অনেক সন্ত্রাসীও রয়েছেন যারা আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চান। এক্ষেত্রে তাদের এই যাত্রা অবশ্যই বিপজ্জনক। তারা যেন আর একপাও এগোতে না পারে সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।’
নড়েচড়ে বসেছে মেক্সিকো সরকারও। দক্ষিণের সীমান্তে কড়াকড়ি আগের যেকোন সময়ের চেয়ে কঠোর করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর শতাধিক সদস্য প্রস্তুত রয়েছে। কোন ধরণের অবৈধ অনুপ্রবেশ মেনে নেয়া হবে না বলে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটি।
এদিকে, রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে দেশটির অভিবাসন আইন কঠোর করা হলেও ডেমোক্র্যাট দলীয় নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে আইন শিথিল করার বিষয়ে এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন। কিন্তু রাতারাতি আইনে কোনো ধরণের পরিবর্তন আসবে না জানিয়ে ওই অভিবাসন প্রত্যাশীদের ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একজনকেও মার্কিন সীমান্তের ভেতর প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে বারবার হুঁশিয়ারি দেয়ার পরও অনিশ্চয়তার পথে এগিয়ে চলেছে দলটি।