বিপিএলের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স

লিগপর্বে রংপুর রাইডার্সের কাছে দু’বার হারলেও প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে এভিন লুইসের ঝড়ো ফিফটিতে শেষ হাসি হাসল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিপিএলের লিগ পর্বে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুরকে (১৬৫/৫) আট উইকেটে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে উঠে গেল কুমিল্লা (১৬৬/২)।

সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ১৬৫ রানের পুঁজি নিয়েও কুমিল্লার সঙ্গে পেরে ওঠেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সাত বল হাতে রেখেই জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে যায় কুমিল্লা। তবে এ হারে ফাইনালের আশা শেষ হয়ে যায়নি মাশরাফিদের। আরেকটি সুযোগ পাবে তারা।

বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ঢাকা ডায়নামাইটসের মুখোমুখি হবে রংপুর। এই ম্যাচের বিজয়ী দল পাবে ফাইনালের টিকিট। কাল এলিমিনেটর ম্যাচে সুনীল নারাইনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে চিটাগং ভাইকিংসের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়ে ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে রয়েছে ঢাকা।

এলিমিনেটরের অগ্নিপরীক্ষায় মুশফিকুর রহিমের চিটাগংকে (১৩৫/৮) ছয় উইকেটে হারায় সাকিব আল হাসানের ঢাকা (১৩৬/৪)। এই হারে শেষ চারেই থেমে গেল চিটাগংয়ের স্বপ্নযাত্রা। অন্যদিকে ফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল ঢাকা।

লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে দারুণ বোলিংয়ে কুমিল্লাকে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে দিলেও কাল ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে খুঁজে পাওয়া গেল না সেই বিধ্বংসী রংপুরকে। ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইসের চওড়া ব্যাটে ১৬৬ রানের লক্ষ্যটা হেসেখেলেই পেরিয়ে যায় কুমিল্লা। লুইসের স্বদেশি ক্রিস গেইলের ঘুম ভাঙার অপেক্ষায় ছিল রংপুর।

কিন্তু অনেকটা সময় ক্রিজে থেকেও প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি গেইল। ৪৬ রান করতে খেলেছেন ৪৪ রান। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রাইলি রুশোও ঠিক সেভাবে চড়াও হতে পারেননি কুমিল্লার বোলারদের ওপর। ৩১ বলে তিনি করেন ৪৪ রান। রংপুর লড়াইয়ের পুঁজি পায় মূলত বেনি হাওয়েলের ঝড়ো ফিফটিতে।

২৮ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। দিন শেষে লুইসের ম্যাচ জেতানো ফিফটিতে বিফলে গেছে হাওয়েলের দারুণ ইনিংসটি। লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় ৩৫ রানে তামিম ইকবালের (১৭) বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে এনামুল হকের (৩৯) সঙ্গে ৯০ রানের জুটি গড়ে ম্যাচ বের করে নেন লুইস।

এনামুলের বিদায়ের পর শামসুর রহমানকে নিয়ে বাকি পথটা পাড়ি দেন তিনি। লুইস ৫৩ বলে ৭১ ও শামসুর ১৫ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে এলিমিনেটর ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নারাইনের দারুণ বোলিংয়ে ১৩৫ রানে আটকে যায় চিটাগং। বল হাতে মাত্র ১৫ রানে চার উইকেট নেয়ার পর ওপেনিংয়ে নেমে ১৬ বলে ৩১ রানের টর্নেডো ইনিংস উপহার দেন ম্যাচসেরা নারাইন। আরেক ওপেনার উপুল থারাঙ্গার ফিফটিতে ২০ বল হাতে রেখেই ছয় উইকেটের অনায়াস জয় তুলে নেয় ঢাকা।

নারাইন ও থারাঙ্গার যুগল তাণ্ডবে চার ওভারেই ৪৪ রান তুলে ফেলে ঢাকা। চিটাগংয়ের সম্ভাবনা কার্যত সেখানেই শেষ। ২০ রানে তিন উইকেট নিয়ে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন চিটাগংয়ের পেসার খালেদ আহমেদ।

কিন্তু লক্ষ্য ছোট হওয়ায় পরপর দুই বলে রনি তালুকদার (২০) ও অধিনায়ক সাকিবের বিদায়েও সেভাবে চাপে পড়েনি ঢাকা। ৪৩ বলে ৫১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান থারাঙ্গা। তার বিদায়ের পর কিয়েরন পোলার্ডকে নিয়ে দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন নুরুল হাসান (২০*)।

এর আগে চিটাগংয়ের ইনিংসে কেউই ঝড় তুলতে পারেননি। ক্যামেরন ডেলপোর্ট (৩৬) ও সাদমান ইসলাম (২৪) তাদের সম্ভাবনাময় ইনিংসকে দীর্ঘ করতে পারেননি। অধিনায়ক মুশফিক ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক। শেষদিকে মোসাদ্দেক হোসেনের (৪০) ব্যাটে ১৩৫ রানের পুঁজি পেলেও শেষরক্ষা হয়নি চিটাগংয়ের।

আরো পড়ুন