সিঙ্গাপুরের ৪২তম ধনী সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা আজিজ খান

এশিয়ার শীর্ষ ধনী হিসাবে পরিচিত সিঙ্গাপুরের চলতি বছরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করেছে মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস। সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় ৪২ নম্বর অবস্থানে রয়েছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি কোম্পানি সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান। বুধবার ফোর্বস সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকা প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, আজিজ খানের মোট সম্পদ রয়েছে ১০০ কোটি ডলার। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৯৫ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা।

ফোর্বসের হিসাবে এবারই প্রথম আজিজ খান সিঙ্গাপুরের বিলিয়ন ডলারের (১ বিলিয়নে ১০০ কোটি) সম্পদশালী ব্যক্তিদের ক্লাবে ঢুকলেন। গত বছর তথা ২০২১ সালে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯৯ কোটি ডলার। ২০১৯ সালের পর থেকে তাঁর সম্পদের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। তাতেই তিনি এ বছর বিলিয়ন ডলারের ধনীর ক্লাবে স্থান করে নিয়েছেন। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল সিঙ্গাপুরে নিবন্ধিত।

এ কারণে বাংলাদেশে ব্যবসা করলেও এটির সম্পদের হিসাব করা হয় সিঙ্গাপুরে। এর আগে ২০১৮ সালে আজিজ খান সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন। সে বছর তিনি ছিলেন ৩৪ নম্বরে। ওই সালে সিঙ্গাপুরে তার ও তার পরিবারের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯১ কোটি ডলার। তবে পরে আবার এই তালিকা থেকে বাদ পড়েন তিনি। ফোর্বসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকায় আজিজ খানের বিষয়ে বলা হয়, জাপানি প্রতিষ্ঠান জেরার কাছে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের ২২ শতাংশ শেয়ার ৩৩ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেন। ফলে ২০১৯ সালে তার সম্পদের পরিমাণ কমে নেমে আসে ৮৫ কোটি ডলারে। এরপর থেকে আবার তার সম্পদের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। তিনি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা।

ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬৩ বছর বয়সী আজিজ খান এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, বন্দর, ফাইবার অপটিক এবং আবাসন খাতের কোম্পানি সামিটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। সামিট গ্রুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফোর্বস মুহাম্মদ আজিজ খানের যে সম্পদের হিসাব দিয়েছে, সেটি শুধু বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসার সম্পদের হিসাব। এর বাইরে সামিটের অন্যান্য খাতের ব্যবসার সম্পদের হিসাব সেখানে যুক্ত হয়নি। জানা গেছে, তিন সন্তানের বাবা মুহাম্মদ আজিজ খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন। সেনা কর্মকর্তার ছেলে পড়াশুনার পর অবকাঠামো খাতের ব্যবসা শুরু করেন। ট্রেডিং ফার্ম হিসেবে সামিটের যাত্রা শুরু হলেও পরে অবকাঠামোতে মনোযোগ দেয় কোম্পানিটি। সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের দায়িত্বে রয়েছেন তার মেয়ে আয়েশা। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ফারুক খানের ভাই মুহাম্মদ আজিজ খান।

সরকারের ২০০৯-২০১৩ মেয়াদে বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ফারুক খান। সামিটের যাত্রা শুরু হয় ট্রেডিং কোম্পানি হিসেবে। পরে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবসায় এসে ভালো করে প্রতিষ্ঠানটি। বিদ্যুৎ খাতের ব্যবসায় তাদের দ্রুত অগ্রগতি হয়। ১৯৯৮ সালে সামিটের প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উৎপাদনে যায়।

আরো পড়ুন