অযৌক্তিক ও বেআইনীভাবে তুলে নেয়া হয় জেসমিনকে: ড. শাহদীন মালিক

মামলা ছাড়াই অযৌক্তিক ও বেআইনীভাবে তুলে নেয়া হয় নওগাঁ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) র‍্যাবের হেফাজতে জেসমিননের মৃত্যুর ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের ময়নাতদন্ত প্রতিবদেন জমা দেয়ার পর এ কথা বলেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।

তিনি আরও বলেন, খবরে যতটুকু এসেছে সুলতানা জেসমিনের বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। তাহলে প্রশ্ন হলো র‍্যাব তাকে ধরলো কেন? কেন তাকে তুলে নিয়ে যাবে? তাছড়া র‍্যাব একটি বিশেষ বাহিনী। প্রতারণা-চুরি-ডাকাতি নিয়ে কাজ তো আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর, র‍্যাব কেন এ কাজ করবে?

আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলে, এরকম ঘটনা আমরা প্রায়ই পত্রিকায় দেখছি। এখন রাষ্ট্রযন্ত্রের আইন মেনে কাজ করার আমাদের যে প্রত্যাশা, জবাবদিহিতা না থাকার কারণে সব জায়গায় সেটা ব্যহত হচ্ছে। গণতন্ত্রেরও ঘাটতি আছে। সে কারণেই এই বেআইনি কাজগুলো হচ্ছে।

এর আগে গত ২৪ মার্চ নওগাঁয় র‌্যাবের হাতে আটকের পর সুলতানা জেসমিন নামে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের এক কর্মচারীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২২ মার্চ আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এরপর শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরের দিকে সুলতানার মরদেহ বুঝে পায় তার পরিবার।

সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরি করতেন।

ঘটনার বিষয়ে জেসমিনের ভাই সোহাগ ও তার বোন জামাই রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার সকালে অফিস করার জন্য বাসা থেকে বের হন জেসমিন। দুপুরের দিকে লোক মারফত তারা জানতে পারেন র‌্যাবের লোকজন জেসমিনকে আটক করেছে। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে তাকে রাজশাহী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু মরদেহ বুঝে পাওয়া যায় আরও একদিন পর ২৫ মার্চ দুপুরে।

নিহত সুলতানার মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক বলেন, নওগাঁ শহরের জনকল্যাণ এলাকায় একটা ভাড়া বাসায় থাকতেন জেসমিন। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় প্রায় ১৭ বছর আগে। তার এক সন্তান। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে সন্তানকে লালন-পালন করে আসছিল জেসমিন। এর আগে কোনো দিন তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ শোনা যায়নি বলেও জানান তিনি।

আটকের বিষয়ে রাজশাহী র‌্যাব-৫ কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার সিপিএসসি মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটক করা হয়েছিল সুলতানাকে। আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তৎক্ষণাৎ তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে রাজশাহী নেয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং গত শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক করে তার মৃত্যু হয়।

আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২৫ মার্চ দুপুরে স্বজনদের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।

#Channel24

আরো পড়ুন