স্ত্রীকে ভিডিও কলে রেখে প্রাণ দিলেন প্রবাসী যুবক

পারিবারিক কলহের জেরে ফেনীর পরশুরামের মো. আরিফ (২৮) নামের এক ওমান প্রবাসী যুবক আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে ওমানের সালালায় তার নিজ বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আরিফ উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ বেলালের ছেলে। তারা বক্সমাহমুদ জামাবিল আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করেন। নিহত আরিফের এক বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে পরিবারের ভাগ্যবদলের আশায় ওমানে পাড়ি জমিয়েছিলেন আরিফ। যাওয়ার সময় ধারদেনা করে গেলেও সেখানে গিয়ে ঠিকভাবে কাজ পাননি। বিগত সময়গুলোতে এক প্রকার বসেই কাটিয়েছেন তিনি। ঠিকভাবে খেতেও পাননি। এসব নিয়ে পারিবারিক টানাপোড়নের জেরে বুধবার বিকেলে স্ত্রীর সঙ্গে ইমোতে ভিডিও কলে থাকা অবস্থায় আরিফ রুমের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে।

মো. হানিফ নামে আরিফের এক শুভাকাঙ্ক্ষী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সে আমার পরিচিত কাছের ছোট ভাই ছিল। প্রবাসে যাওয়ার পরও প্রায় যোগাযোগ করত। প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে করে প্রবাসে গিয়েছিল। তারা দাম্পত্য জীবনে সুখী ছিল না। ওমান থেকে কল দিলে সব সময় বলত, সে দেশে চলে আসবে, কাজ নেই, কষ্ট করছে এসব। তবুও আমি বোঝাতাম। এসব সমস্যায় মানসিক অশান্তি থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে।

এদিকে পরিবারের ছোট ছেলেকে হারিয়ে আরিফের মায়ের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমাদের জন্য কিছু করতে সে প্রবাসে গিয়েছিল। কিন্তু এখন ছেলেকেই হারালাম। অন্তত চোখের সামনে থেকে ছেলেকে শেষ বিদায় দিতে চাই।

বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের সদস্য সরোয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রেমের সম্পর্ক থেকে তাদের বিয়ে হয়। আরিফের স্ত্রী ধনী পরিবারের মেয়ে। এখনও সে তার বাবার বাড়িতে থাকে। এসব নিয়ে মনোমালিন্যের কথা শুনেছি।

তিনি আরও বলেন, আরিফের মৃত্যুর খবর শুনে তাদের বাড়িতে যাই। পরিবারটির অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। ওমান থেকে তার মরদেহ দেশে আনার মতো খরচ বহনের সামর্থ্য তাদের নেই। এ অবস্থায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।

আরো পড়ুন