নিয়মিত অফিস না করা এবং ৫০ টাকার জন্মসনদ নিতে তিন থেকে আট হাজার টাকা গ্রহণ করা রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত ইউপি সচিব জুবাইর রহমানকে প্রত্যাহার করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে প্রত্যাহার এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম।
এর আগে, গত ৮ জুলাই দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে ‘৫০ টাকার জন্মসনদের জন্য ইউপি সচিব নেন ৮ হাজার টাকা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে স্থানীয় প্রশাসনের টনক নড়ে। পরে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
রাজবাড়ী স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন স্বাক্ষরিত পত্রে এই অফিস আদেশ দেওয়া হয়। অফিস আদেশ সূত্রে জানা যায়, পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইউপি সচিব জুবাইর রহমানকে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রত্যাহার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংযুক্তি প্রদান করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তরুণ কুমার দাসকে নবাবপুরে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। পরবর্তীতে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে একটি চিঠি প্রদান করি। তার প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার ইউপি সচিব জুবাইর রহমানকে নবাবপুর থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বুধবার (১২ জুলাই) বেলা ১১টায় ইউপি সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগদান করেছে। এখন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি চলছে।
রাজবাড়ীর স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিতর্কিত ইউপি সচিবকে বালিয়াকান্দি ইউএনও কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, ইউপি সচিব জুবাইর রহমানের বিরুদ্ধে নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদশা আলমগীর, নারী ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় একাধিক সেবাগ্রহীতা প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণ এবং নিয়মিত অফিস না করার অভিযোগ আনেন। ৫০ টাকার জন্মসনদে ইউপি সচিব নেন ৩ থেকে ৮ হাজার টাকা। আর সাড়ে ৩ মাসে তিনি অফিস করেছেন মাত্র ১৫ দিন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে এবং শাস্তি হিসেবে তার বেতন থেকে দুটি ইনক্রিমেন্ট বন্ধ করে দেন জেলা প্রশাসক।