তৃণমূল পুনর্গঠনে উদ্যেগী হওয়ার পর দুই বছরে মাত্র ১০টি জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পেরেছে বিএনপি। আর ২৭ জেলায় করেছে আহবায়ক কমিটি। বাকি ৪১টি সাংগঠনিক জেলা চলছে মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে।
অনেক জেলায় আবার কমিটি গঠনের পর প্রকাশ্যে হয়েছে দলীয় কোন্দল। দলের নেতারা বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের বাধা আর করোনা মহামারির কারণে তৃণমূল পুনর্গঠনও ঠিকমতো করতে পারছেন না তারা।
সবশেষ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করা হয়েছিল নরসিংদী জেলা বিএনপির কমিটি। দু বছর মেয়াদী এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ৭ বছর আগে। নরসিংদী জেলা বিএনপি ও যুগ্ম-মহাসচিব সভাপতি খায়রুল কবির খোকন জানান,’দলের অনিবার্য প্রয়োজনেই আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। দলের নির্দেশেই হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে তো সেখানে থাকিনি। কাউন্সিল সম্মেলনের মাধ্যমে দলে নতুন নেতৃত্ব আসবে। আমাকে থাকতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।’
২০১৪ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। যার মেয়াদ ছিল ৯০ দিন। কিন্ত ৬ বছর পেরোলেও সেই আহবায়ক কমিটিই বহাল রয়েছে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা বলেন,’৯০ দিনের মধ্যে কমিটি করে দেয়া স্বাভাবিক নিয়মের মধ্যে পড়ে। কিন্তু উত্তরের রাজনীতি এতটাই স্থবির হয়ে পড়েছিলো অনেক কারণে, তাই এটা করা হয়ে ওঠেনি। অবশ্যই দায়িত্ব ছিল আহ্বায়ক কমিটির একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে দেয়া।’
বিএনপির ৭৯ টি সাংগঠনিক জেলার বেশির ভাগের অবস্থা এমনই। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি শরিফুল আলম জানান,’আমরা যেন কাজগুলো সুচারু রুপে করতে না পারি, সরকারের একটা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশাসনের হ্যারাজমেন্ট আছে। আমরা বাধাগ্রস্ত হই। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের এই কাজগুলো থেমে যায়।’
শরিয়তপুর জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম বলেন,’২০১৭ সালে কমিটি হয়েছে। কেন আবার কমিটি হচ্ছে না। এর থেকে উত্তরণের জন্য সিনিয়র এবং কেন্দ্রিয় নেতাদেরকে জবাবদিহি করলে উত্তর আসবে।’
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান ইকবাল জানান,’বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের নেতা-কর্মী জেলে থাকার কারণে, জেলা নেতৃবৃন্দ জেলে থাকার কারণে পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়নি।’
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পরই দল ঢেলে সাজাতে মাঠে নামে বিএনপি। গেল দুই বছরে তার কতটা করতে পেরেছে দলটি? বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন,’আহ্বায়ক কমিটি দেয়া হয়েছে ২৭টি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়া হয়েছে ১০টি এবং আংশিক কমিটি আছে একটা এই হলো ৩৮টা। আর বাকি যে ৪১টি কমিটি আছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোর কমিটি আছে, অনেকগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে।’
আছে কোন্দলও। ১১ বছর পর বাগেরহাট জেলা বিএনপির কমিটি ভেঙ্গে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পরই বিরোধে জড়ায় নেতাকর্মীরা। বাগেরহাট জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি এম এ সালাম জানান,’বাগেরহাটে বিএনপি স্বচল করতে হলে আবার নেতাদের স্বক্রিয় করতে হবে। এখন যারা আছেন তারা অবশ্যই অযোগ্য বিধায় এখনও পর্যন্ত একটাও মিটিং করতে পারেনি।’
বাগেরহাট জেলা বিএনপি আহবায়ক কমিটি সদস্য কাজী খায়রুজ্জামান শিপন বলেন,’একটা গ্রুপ আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। আরেকটা গ্রুপ হয়তোবা কেন্দ্রের থেকে সাপোর্ট পাচ্ছে না।’
ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জে ও মাদারিপুরে বিএনপির কোন কমিটি নেই।
#ডিবিসি নিউজ