ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর স্কুল এন্ড কলেজে চলতি বছর এসএসসিতে পাস করা শিক্ষার্থীদের ছাড়পত্র (প্রশংসাপত্র) দিতে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত ক্রমেই এই টাকা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর ২২২ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অভিযোগ উঠেছে, এসএসসিতে পাস করা ওইসব শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র (প্রশংসাপত্র) আনতে গেলে, কর্তৃপক্ষ প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে রশিদের মাধ্যমে ১০০০ হাজার টাকা করে আদায় করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় অভিভাবক বলেন, ‘নবীনগরের অন্য কোনো স্কুলে ছাড়পত্র নেয়ার সময় এভাবে ১০০০ টাকা করে নেয়া হয় বলে আমাদের জানা নেই। টাকাটা মাত্রাতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মোহিনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রত্যেকের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া স্কুল এন্ড কলেজ হওয়া সত্ত্বেও কেন শিক্ষার্থীরা এই কলেজে না থেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছে একারণে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে নবীনগর সদরে অবস্থিত ইচ্ছাময়ী পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কাউছার বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ছাড়পত্র দেয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ (দুইশত) টাকা করে নিচ্ছি।
অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইডিয়াল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ব্যাপারী বলেন, ছাড়পত্র দেয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ (দুইশত) টাকা করে নিচ্ছি। সেটা আমরা স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয় করে শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় করার জন্যে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকাররম হোসেন বলেন, ‘ছাড়পত্র নেয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোনো সরকারি নির্দেশনা নেই। এটি স্কুলের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। এর বাহিরে আপাতত আমরা কিছু বলতে পারছি না’।
এদিকে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতমাসে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাড়পত্র বাবদ ১০০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এরপরও যদি কোনো শিক্ষার্থী দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তাহলে মানবিক বিবেচনা করে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা কম রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত রয়েছে।
এ বিষয় জানার জন্য বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) খলিলুর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় নানা মুখরোচক আলোচনা চলছে।