দুর্নীতি মামলায় ৩০ বার সময় চেয়েও আদালতে হাজির হননি বিএনপি চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া। আর তাই বাকি আসামিদের উপস্থিতি থাকা স্বত্ত্বেও এক যুগেও শুরু করা যাচ্ছে না গ্যাটকো দুনীতি মামলার বিচারকাজ।
মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) পূর্বনির্ধারিত দিনে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক নজরুল ইসলামের এজলাসে হাজির হবার কথা ছিলো বেগম খালেদা জিয়ার। এদিন কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন মামলার বাকি আসামিরাও। তাই দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যাশা ছিলো বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতির মধ্য দিয়ে এক যুগ ধরে ঝুলে থাকা মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
কিন্তু আবারও হতাশ হতে হয় তাদের। আগের ৩০ বারের মতোই বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে জানান, তার মক্কেলের অসুস্থতার কথা। মামলার শুনানি পেছানোর আবেদন জানিয়ে করেন সময় আবেদন। যদিও এসময় দুদক ও রাষ্টপক্ষ থেকে শুনানি পেছানোর বিরোধিতা করা হয়। তবে আদালত আবারও বেগম জিয়ার আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২৬ জানুয়ারি শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
২০০৭ সালে করা মামলাটির বিচারকাজ দীর্ঘ ১২ বছরেও শুরু করতে না পারায় ক্ষুব্ধ দুদক আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম। তিনি গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন বেগম জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বার বার সময় আবেদনই বিচারকাজ শুরুর প্রধান বাধা।
দুদক আইনজীবী বলেন, ‘বেগম জিয়া বার বার শুনানি পেছাচ্ছেন আর আদালতে অনুপস্থিত থাকছেন। রাষ্ট্রের সাড়ে ১৪ কোটি টাকা ক্ষতিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলার বিচারকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। পাশাপাশি মামলা পরিচালনার ব্যয়ও বাড়ছে।’
যদিও বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদারের দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে বাসার বাইরে বের হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বলেই আদালতে আসছেন না বেগম জিয়া। বিএনপি চেয়ারপার্সন শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ বলেও দাবি করেন তিনি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতির অভিযোগে, ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর বেগম খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন। পরের বছর ১৩ মে বেগম খালেদা জিয়াসহ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় ৬ আসামির মৃত্যু হওয়ায় এখন মামলায় মোট আসামি ১৮ জন।
এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়া ছাড়াও চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রিসভার ৪ জন সদস্যকে আসামি করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে কাজ পাইয়ে দিতে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন এবং রাষ্ট্রের সাড়ে ১৪ কোটি টাকা ক্ষতিসাধন হয়েছে।