ছাত্রলীগের দুই নেতার নামে আদালতে মামলা করেছেন ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও নবগঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক আখতার হোসেন। গত ৪ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি আত্মপ্রকাশের দিন হামলার অভিযোগ এনে এ মামলা করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলামের আদালতে আখতার হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিমউদ্দিন হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী রাশেদুজ্জামান রনি (২৫) ও জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ছাত্র ঋভু মণ্ডলের (২৪) নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৬ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার আরজিতে বাদী আখতার হোসেন অভিযোগ করেন, গত ৪ অক্টোবর তারিখে গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি নামক সংগঠনের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন তারা। ওই ঘোষণা তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের বিপরীতে অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভবনের সামনে একটি প্রেস কনফারেন্স আয়োজনের মাধ্যমে করেন। ওই প্রেস কনফারেন্সের সফল আয়োজন শেষে তিনি তার কয়েকজন সহযোদ্ধাদের নিয়ে ডাকসু ভবন থেকে নাজিম উদ্দিন রোডে অবস্থিত তার বাসার দিকে হেঁটে রওনা হন। এর একপর্যায়ে আনুমানিক দুপুর দেড়টায় তারা শাহবাগ থানার আওতাধীন পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে এসে পৌঁছালে হঠাৎ রাশেদুজ্জামান রনির নেতৃত্বে ঋভু মণ্ডলসহ অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জন মোটরসাইকেলে করে এসে তাদের পথরোধ করেন। তখন ঋভু মণ্ডল তাকে দেখে উচ্চস্বরে গালাগাল শুরু করেন।
আসামি রনি তখন বলেন- “আখতার তুই আজকে শেষ, নেতা হইছিস, আজকে তোর নেতাগিরি বের করমু” বলে তাকে মাটিতে ফেলে দিয়ে মাথায়, মুখে, বুকে, পিঠে লাথি মারা শুরু করেন। রনি ও ঋভুর নেতৃত্বে অজ্ঞাত আরও ৬/৭ জন তাকে হাত এবং ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। তখন সঙ্গে থাকা ফয়সাল, গালিফসহ অন্যরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে রনি, ঋভুসহ বাকিরা তাদেরও এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। রনি দুই হাতের আঙুল তার মুখের ভেতরে ঢুকিয়ে ঠোঁট টেনে ছিঁড়ে ফেলতে চেষ্টা করেন। তার ঠোঁট কিছুটা ছিঁড়ে রক্ত পড়তে থাকে। রনি তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথার চুল ধরে রাস্তার সঙ্গে আঘাত করতে থাকেন। এতে তার দাঁত ফ্র্যাকচার হয়ে যায় এবং মুখের ভেতর ও দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত পরতে থাকে। এ অবস্থা দেখে তার পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং পথচারীরা তাদের বাঁচাতে এগিয়ে এলে রনি-ঋভুসহ বাকিরা দ্রুত মোটর সাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, হামলার পর তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে গত ৯ অক্টোবর রাত ৯টায় শাহবাগ থানায় মামলা দায়েরের জন্য গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা না নেওয়ায় তিনি আদালতে এ মামলা করেন।