বান্দরবানে পাহাড় কেটে রাস্তা প্রশস্ত করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। একই সঙ্গে বালুর বদলে পাহাড়ের মাটি রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে এই দৃশ্য দেখা গেছে।
এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার সুয়ালক-লামা সড়কের আমতলী পাড়া থেকে টংকাবতী পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার ও প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। আট কোটি ৩৪ লাখ দুই হাজার ৯৪৫ টাকা বরাদ্দে এই কাজ করাচ্ছে এলজিইডি। স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মারমা এন্টারপ্রাইজ ও কিউসি রাস্তা সংস্কারের কাজ পায়। তাদের হয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন স্থানীয় ঠিকাদার মো. রুবেল হোসেন।
তবে সংস্কারকাজে বালুর বদলে পাহাড়ের মাটি ও নিম্নমানের ইট ব্যবহার করছেন ঠিকাদার। নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় রাস্তার স্থায়িত্ব নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে দুই কিলোমিটারের বেশি রাস্তা সংস্কারে বালুর বদলে পাহাড় কেটে মাটি দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টংকাবতী এলাকায় এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি নেওয়া হচ্ছে। এসব মাটি রাস্তার পাশে রাখা হচ্ছে। কয়েকজন শ্রমিক মাটিগুলো রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজে ব্যবহার করছেন। সেই সঙ্গে ৮৫০ কেজি ওজনের ছোট রোলার দিয়ে মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে। রাস্তা সংস্কারে এত ছোট রোলার দেখে অবাক স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, এখানে রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ চলছে। রাস্তার কাজ সম্পর্কে আমরা বুঝি না। কিন্তু পাহাড়ের মাটি ও নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তার কাজে এত ছোট রোলার ব্যবহার করতে আগে দেখিনি।
টংকাবতীর বাসিন্দা ইয়ংরি ম্রো বলেন, ছোট রোলারটি দেখতে এসেছি। আরও অনেকে এসেছেন। আগেও এখানে অনেক রাস্তার কাজ হয়েছে। কিন্তু এত ছোট রোলার জীবনেও দেখিনি। বালুর বদলে পাহাড়ের মাটি ও নিম্নমানের ইট ব্যবহার করছেন ঠিকাদার।
রোলার চালক সৈয়দ নুর বলেন, আমাকে কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন ঠিকাদার। রোলারটি ৮৫০ কেজির হলেও চাপ দিলে ওজন আরেকটু বাড়ে। রাস্তার মাটি সমান হয়ে যায়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার মো. রুবেল হোসেন বলেন, ‘পাহাড় কেটে রাস্তার কাজে মাটি দেওয়া হচ্ছে, তা আমি বিশ্বাস করি না। নিয়ম মেনেই রাস্তা সংস্কারের কাজ করছি। কোনও অনিয়ম হচ্ছে না।’
এ বিষয়ে বান্দরবান এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নাহিদ হোসেন বলেন, রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কথা শুনেছি। বেশ কয়েকবার ঠিকাদারকে বলেছি, যেন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার না করে। এরপরও কথা রাখেননি ঠিকাদার। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।