প্রথম ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে কোনো বিউটি কনটেস্টের ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়লেন অ্যাঞ্জেল লামা। মিস ইউনিভার্স নেপালের ফাইনালিস্ট হলেন তিনি। অনুষ্ঠানে পুরস্কার যখন তার হাতে তুলে দিচ্ছিলো তখন চোখে মুখে গর্বের ছাপ স্পষ্ট ধরা পড়েছিল।
বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ কয়েক বছর আগে ট্রান্সজেন্ডার মানুষজনকে বিউটি কন্টেস্টে জায়গা দেয়া শুরু করে। তার মধ্যে নেপাল অন্যতম। মায়ানমার, মঙ্গোলিয়ার পরই রয়েছে নেপাল। এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথমের দিকে উচ্চতা, ওজন ও সৌন্দর্য্যকে প্রাধান্য দিয়ে থাকলেও পরের দিকে সেই নিয়মে ছাড় দেয়া হয়। আর ছাড় দেওয়ার পরই বর্তমানে ১৮ থেকে ২৮ বছরের যেকোনো মহিলাই এই ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সুযোগ পায়।
এ বিষয়ে ২১ বছর বয়সী লামা রয়টার্সকে জানান, সমাজে মানুষের মধ্যে কত বৈচিত্র রয়েছে, তা দেখানোর জন্য আমি মিস ইউনিভার্স নেপালে অংশগ্রহণ করি। আমি যদি স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে সকলকে লিঙ্গসমতার বিষয়টি দেখাতে পারি, তা হলে সেটাই হবে আমার সব চেয়ে বড় পাওনা।
২০০৮ সালের পর থেকে নেপালে হিন্দুরা এই ট্রান্সজেন্ডারদের ব্যাপারটিকে বুঝতে শুরু করে এবং মেনে নিতে শুরু করে। তার আগে ২০০৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট বৈষম্য বিরোধী নির্দেশিকা জারি করে। সেখানে জানিয়ে দেয়, বাকি সকলের মতো এসব মানুষদেরও সব বিষয়ে সমান অধিকার রয়েছে। এরপর ২০১০ সালে প্রথম প্রাইড প্যারেড শুরু হয়।
এ বিষয়ে মিস ইউনিভার্স নেপালের ন্যাশনাল ডিরেক্টর নাগমা শ্রেষ্ঠা জানান, যে লিঙ্গেরই হোক না কেন, সকলের অধিকার এখানে সমান। যদি তারা বলেন, তারা মহিলা, তা হলে তারা মহিলা এবং তাদের মহিলা হিসেবেই বিবেচনা করা হবে। নাগমার তত্ত্বাবধানেই এই প্রতিযোগিতার নিয়মে কিছু পরিবর্তন আসে।
তিনি জানান, এলজিবিটি কমিউনিটির জন্য তিনি সব সময়ে ভালো কিছু করতে চেয়েছিলেন। আর অ্যাঞ্জেল ফাইনালিস্ট হওয়ায় তাই আনন্দে ভাসছেন তিনি। জানাচ্ছেন, এই বার্তা সকলের কাছে পৌঁছবে। এ বিষয়ে অ্যাঞ্জেল আরো জানান, তিনি যখন বুঝতে পারেন নিজের মধ্যে পরিবর্তনের বিষয়টি তখন বাবা-মা’কে সব খুলে বলেন। কিন্তু যেহেতু তার বাবা-মা’র ন্যূনতম শিক্ষাও নেই, তাই বিষয়টি মেনে নিতে, বুঝতে অনেকটা সময় লেগে যায়।