সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের মেয়েকে নিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা হয়েছে।
সোমবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে মাদারীপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, কাদেরিয়া পাবলিকেশন্স অ্যান্ড প্রোডাক্টস লিমিটেডের পরিচালক আব্দুল কাদের ও কাদেরিয়া পাবলিকেশন্স অ্যান্ড প্রোডাক্টস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তবে তার নাম উল্লেখ করা হয়নি এজাহারে। আদালতের বিচারক মোহাম্মদ হোসেন মামলাটির গ্রহণ শেষে আসামিদের প্রতি সমন জারি করে ২৭ অক্টোবর মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, শাজাহান খানের মেয়ে ঐশী খান ইংল্যান্ডের কোভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ঐশী খান লন্ডন থেকে ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। তখন করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ায় তিনি ইংল্যান্ডে যেতে পারেননি। ২৬ জুলাই বিমানের একটি ফ্লাইটে ইংল্যান্ডে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি নিয়ম মেনে করোনার নমুনা দেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের করোনা আইসোলেশন সেন্টারে গত ২৪ জুলাই করোনার নমুনা দেন। পরদিন বিকেল চারটার দিকে তার করোনা নেগেটিভ এসেছে বলে রিপোর্ট দেখতে পান। ওই রিপোর্ট নিয়ে ২৬ জুলাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান ঐশী। তখন ইমিগ্রেশনে যাচাইয়ের সময় সেখানকার কর্মকর্তারা শাহজাহান খানের মেয়ে ঐশীকে জানান যে, অনলাইনে তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ দেখাচ্ছে।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, করোনার এই ভুল রিপোর্টের জন্য দায়ী সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেন্স সেন্টার। ঐশীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির পরিচালক চিকিৎসক আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে ভুলের বিষয়টি স্বীকার করেন। তাদের ডেটা অপারেটরের ভুলের কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়। যার জন্য শাজাহান খান কিংবা তার মেয়ে ঐশী খান মোটেও দায়ী নন।
এরপরেও দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন ২৮ জুলাই তার পত্রিকার সম্পাদকীয়তে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাজাহান খানকে নিয়ে অসত্য তথ্য লেখেন বলে অভিযোগ উঠে। পত্রিকাটি শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ‘করোনাভাইরাস সনদ জালিয়াতির’ অভিযোগ তোলে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা করেন শাজাহান খানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া হাওলাদার।
মামলার বাদী অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বলেন, ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে একই ঘটনায় গত ১৬ আগস্ট শাজাহান খান দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মানহানির মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশও দেন আদালত।