চিত্রনায়ক জাফর ইকবাল। যিনি ছিলেন সত্তরের দশকে বাংলা সিনেমায় সাড়াজাগানো নায়ক। সুদর্শন এই নায়ক তার দক্ষ অভিনয়ের মাধ্যমে সে সময় দর্শকদের মনে আলাদাভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি নায়ক জাফর ইকবাল তার সব ভক্তদের কাঁদিয়ে পরপারে পাড়ি জমান।
মৃত্যুর প্রায় তিন দশক পরে এসেও বাংলা সিনেমায় সাড়া জাগানো এই নায়কের আবেদন হারায়নি। তবে এই তারকার কবরটি অন্য সবার সঙ্গে রয়েছে আজিমপুর কবরস্থানে। এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তারসঙ্গে জুটি হয়ে বহু সিনেমায় অভিনয় করা আরেক তারকা অভিনেত্রী ববিতা।
অভিনেত্রী ববিতা বলেন, ‘জাফর ইকবাল ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, নামী নায়ক। কিন্তু তার স্থান হয়েছে আজিমপুরে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে ভালো কোনো স্থানে কবর দিলে ভালো হতো। কেন দেয়া হয়নি জানি না। এই বিষয়গুলো নিয়ে মন খারাপ হয়। তার কথা খুব মনে পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাফর ইকবাল খুব ভালো ইংরেজি গান গাইতে পারতেন। গিটার বাজিয়ে ওর মুখে ইংলিশ গান শোনাটা আমাদের সময়কার যেকোনো মেয়ের জন্য স্বপ্নের একটি মুহূর্ত। ওর মতো পরিপূর্ণ কোনো নায়ক আমাদের চলচ্চিত্রে আসেনি।’
প্রায় ১৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন জাফর ইকবাল। এর মধ্যে ববিতার সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন ৩০টিতে। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে, ‘অবুঝ হৃদয়’, ‘ভাই বন্ধু’, ‘অবদান’, ‘প্রেমিক’, ‘সাধারণ মেয়ে’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘দিনের পর দিন’, ‘বেদ্বীন’, ‘অংশীদার’, ‘মেঘ বিজলী বাদল’, ‘নয়নের আলো’, ‘সাত রাজার ধন’, ‘আশীর্বাদ’, ‘অপমান’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘গৃহলক্ষ্মী’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘প্রেমিক’, ‘নবাব’, ‘প্রতিরোধ’, ‘ফুলের মালা’, ‘সিআইডি’, ‘মর্যাদা’, ‘সন্ধি’, ‘বন্ধু আমার’, ‘উসিলা’ ইত্যাদি।
আশির দশকে ‘কেন তুমি কাঁদালে’ শিরোনামে তার একটি অডিও অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছিল।