যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ৩০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) এক তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে অনুসন্ধান শুরু হয়।
এফবিআইয়ের তদন্ত থেকে জানা যায়, হাসিনা ও জয় যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে ৩০ কোটি ডলার (প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা) পাচার করেছেন। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাটি দাবি করেছে, তারা জয়ের আর্থিক কর্মকাণ্ডের উল্লেখযোগ্য অনিয়ম উদঘাটন করেছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে এক ফেসবুক পোস্টে ভিন্ন দাবি করলেন জয়।
তিনি লিখেছেন, অনির্বাচিত এবং অসাংবিধানিক ইউনূস সরকার আমার এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে নিরলসভাবে কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি তারা এফবিআইয়ের একটি ভুয়া রিপোর্ট ফাঁসের দাবি করেছে। তবে কিছু বোকামির মাধ্যমে তারা বুঝিয়ে দিয়েছে যে রিপোর্টটি মিথ্যা ও বানোয়াট:
১. তারা যে এফবিআই এজেন্টের নাম উল্লেখ করেছে, তিনি বহু বছর আগে এফবিআই থেকে অবসর নিয়েছেন।
২. যাকে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আইনজীবী বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি ২০১৩ সালে মারা গেছেন।
৩. আমার নামে যে গাড়িগুলোর তালিকা দেখানো হয়েছে, সেগুলো আমি ২০ বছরেরও বেশি সময় আগে কিনেছিলাম। একটি বাদে বাকি সবক’টি গাড়ি ইতোমধ্যে বিক্রি করা হয়েছে।
৪. আমার কোনো বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। আমি চ্যালেঞ্জ করছি যে তারা এর কোনো প্রমাণ দিক।
সবশেষে, ক্রিস্টিন এবং আমি আর একসঙ্গে নেই। আমরা প্রায় তিন বছর আগে আলাদা হয়েছি।
এর আগে ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল মার্কিন বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে এফবিআইয়ের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা হংকং ও কেম্যান আইল্যান্ডে সজীবের ব্যাংক হিসাব খুঁজে পেয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, স্থানীয় একটি মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির মাধ্যমে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক ও লন্ডনে সন্দেহজনক অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি জানা যায়। জয়ের সন্দেহজনক কার্যকলাপ খতিয়ে দেখতে এফবিআই যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। প্রতিবেদনে সম্ভাব্য অবৈধ ক্রিয়াকলাপ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয় এবং বিষয়টি নিয়ে স্পেশাল এজেন্ট লা প্রিভোটের সঙ্গে মার্কিন বিচার বিভাগের সিনিয়র ট্রায়াল অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলসের যোগাযোগ হয়।
তবে জয়ের দেওয়া মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের একটি লিংকে গিয়ে দেখা যায়, অ্যাটর্নি লিন্ডা স্যামুয়েলস ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন, এমন খবর ছাপা রয়েছে।